রাজনীতিতে সত্য বলা জরুরী। অসত্য রাজনীতির ফলাফল ভাল হয়না। ৭৩, ৭৪ সালে বিপ্লবী নেতারা অংগর পোতা, দাহ গ্রাম আর ছিট মহল নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ময়দান উত্তেজিত করেছে। ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে বলে বংগবন্ধুর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। জায়গাটি কোথায় কেউ কোনদিন গিয়েও দেখেননি। সেই সব বিপ্লবী নেতারা অনেকেই বেঁচে আছেন এখনো। সরকার বদল হলে, কেউ কেউ মন্ত্রীও হয়েছেন। ক্ষমতায় গিয়ে সেই দাবীটি আর মনে রাখেননি। বর্তমান সরকার গেল বছর ছিট মহলকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে সেখানে সব রকম সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। অংগর পোতা আর দাহগ্রামের কোন অস্থিত্বই খুঁজে পাওয়া জায়নি। অথচ এই দ্বাবী নিয়েই বংগবন্ধুর সরকারের বিরুদ্ধে কি করেনি বিপ্লবী নেতারা। ৭৫ এ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বি এন পি ভারত বিদ্বেষি শ্লোগান দিয়েছে। আওয়ামী লীগকে ভারতের বি টিম বানিয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করেছে। বি এন পি এবং জাতীয় পার্টি একইভাবে মিথ্যাচার করেছে জনগনের সাথে। বেগম জিয়া নীজেই দাবী করেছেন আওয়ামী লীগ কে ভোট দিলে মসজীদে উলু ধ্বনি শোনা যাবে। জনগন আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। দেশের মসজীদে উলু ধ্বনি নয়, আযানই শোনা যাচ্ছে এখনো। বরং বি এন পি আন্দোলনের নামে মানূষ হত্যা করেছে আর, পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে ফেলেছে আগুন দিয়ে।
নির্বাচন এলেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই সহজ প্রচারনাটি করেন ক্ষমতায় যেতে। ক্ষমতায় গিয়ে বেমালুম ভুলে যান দেশের স্বার্থটি। ভারতের আপ্যায়নে পানি চুক্তির কথাটিও মনে থাকেনা তাদের। নির্বাচনে জয়ী হতে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে ভারতের কাছে গ্যাস রপ্তানীর চুক্তিতেও দ্বিধা করেননা। যারা আওয়ামী লীগকে ভারতের দালাল বলেন তারাও জানেন, বংবন্ধুর দাবীতে এক দিনে ভারতীয় সৈন্যরা চলে গিয়েছিল। অথচ দিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর অবস্থান নেওয়া আমেরিকান, বৃটিশ সৈন্যরা আজও ফিরে যায়নি জার্মানী, কোরিয়া আর জাপান থেকে। ৪৪০০০ কিউসেক পানি চুক্তি করেছিলেন বংগবন্ধু ভারতের সংগে। ক্ষমতায় গেলে ভুলে যান সকলেই কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই পানি চুক্তি নিয়ে মাঠে নামেন। দেশে এখন যেভাবে উন্নতি হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে নেতাদের কথা বলার সুযোগ নেই তাই, রাজনৈতিক বিরোধীতা করতেই বার বার ভারত ইস্যুটিকে টেনে আনে রাজনীতিতে। প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সংগে বিরোধ রয়েছে সবখানেই। মেক্সিকোর সংগে আমেরিকার, হাংগেরীর সংগে পোল্যন্ডের, ভারতের সংগে নেপাল এবং চীনের সংগেও রয়েছে। পাকিস্তানের সংগে যূদ্ধ হয়েছে তিনবার। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের মত এমন অসত্য প্রচারনা হয়না কোনদেশে। গতকাল দেখলাম, ভি পি নুরু ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তব্য রাখছেন একই ভাষায়। পুলিশ বাহিনীতে ভারতীয় নাগরিক কে নিয়োগ দেওয়ার এক ভয়ংকর তথ্য দিয়েছে নুরু। তথ্যটি সত্য হলে অবশ্যই তদন্তের দ্বাবী রাখে। প্রতিরক্ষা দপ্তরের যে কোন পদে চাকুরীর জন্য পুলিশ রিপোর্ট জরুরী। বাপ দাদার ঠিকানাও খুঁজে বের করে রিপোর্ট দেয় পুলিশ। নুরু যে অভিযোগটি করেছে তার, তদন্ত দাবী করছি। ভাষা ব্যবহারেও নুরু রাখি বন্ধনের কথাটি ধর্মিয় ইংগিত দেখিয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর দুর্নীতিতে চ্যম্পিয়ান হয়না। বিদ্যুতের নামে খাম্বা আর, হাওয়া ভবনের খবরদারী নেই দেশে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ নেই তাই, ভারত প্রীতির কথা বলে একটি রেসিয়াল বিদ্রোহ সৃষ্টি করাতে চায় পরাজিত নেতারা। নুরুরা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেনি, তারাই এখন যূদ্ধের ইতিহাস বলে মদদদাতাদের শেখানো ভাষায়। রাজনীতিতে সমালোচনা গনতন্ত্রেরই শিষ্ঠাচার। বক্তব্য সত্য হলে অবশ্যই তা গ্রহন যোগ্য হবে। তবে, অসত্য বক্তব্য দিয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ি দন্ডনিয় অপরাধ। নুরুর বক্তব্য তদন্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
৩১ আগষ্ট ২০২০।