আবারও লক ডাউন শুরু হয়েছে। বর্ডার এলাকায় করোনা সংক্রমন আর মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস নিষিদ্ধ করা হয়েছে আবার। কিন্তু মানুষ নিয়ম নীতি মানছে না। দেশে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সবই বন্ধ। অন লাইনে ক্লাশ চালু থাকলেও সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় ছাত্র ছাত্রীরা অসহায়। স্কুলগামী শিশু কিশোরদের লেখাপড়া নেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি ভবিষ্যতের আশায় এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে।। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই বছরেও কোন আশার বানী শোনাতে পারেনি। অবস্থাটি কতদিন চলবে কেউ জানেনা। রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হলে রাজস্ব খাত ব্যহত হবে মারাত্বক ভাবে। দেশ অচল হয়ে পরবে। যেভাবে অবকাঠামো বৃদ্ধি হয়েছে উৎপাদন বৃদ্ধি না হলে বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পরবে। ক্ষুদ্র শিল্পের উৎপাদন দেশীয় বাজারে কিছুটা হলেও স্বচল রয়েছে। কিন্তু রপ্তানী করোনার কারনে ব্যহত হচ্ছে। চাকুরী হারিয়ে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশে। শীঘ্রই করোনার আছর কেটে যাবে মনে করার কারন নেই। বাংলাদেশে এমন কোন খনিজ সম্পদও নেই যা অর্থনীতিকে স্বচল রাখবে।
৭৪ সালে অনাবৃষ্টি, খড়া, অতিবৃষ্টি, বন্যা, সাইক্লোন আর ঘুর্নিঝড়ের কারনে ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়েছিল। দুর্ভিক্ষ আসন্ন বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধুর সরকার খাদ্য আমদানি করেছিল। দেশীয় জোতদার, মূনাফাখোর অধিক মূল্যের আশায় গুদামজাত করে রেখেছিল প্রয়োজনীয় পন্য। আমদানিকৃত খাদ্যের জাহাজ প্রলম্বিত হয়েছিল পৌছতে। তাই দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যায়নি। একই চিত্র এখন আবার শুরু হয়েছে। দেশের অর্থ নিয়ন্ত্রন করছে ধনীক পরিবার। এখন তারা গুদামজাত করেনা। ব্যাংকের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে দেয়। কি পরিমান অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে সঠিক অঙ্ক জানার উপায় নেই। তবে ব্যাংকের অবস্থা ভাল নেই। ইরানের মত ধনী দেশেও একইভাবে অর্থ পাচার হয়েছে রাজা শাহ পাহলেবীর বিদায়ের পর। সেই ইরান তেল সমৃদ্ধ হয়েও এখন দারিদ্র সীমানার নীচে চলে গেছে। বাংলাদেশেও এখন ধনীক শ্রেনীর হাতে অর্থনীতি জিম্মি হয়ে পরেছে। ব্যাংক মালীকরাই ঋন গ্রহিতা। প্রত্যেকেরই (প্রায়) বিদেশে আবাসন রয়েছে। সুযোগ পেলেই ব্যাংকের টাকা লুট করে সটকে পরে। ইরানীদের মত বিদেশে লগ্নি খাটিয়ে আয়েশী জীবন কাটায় বিদেশে। লক্ষনটি ভাল নয়। উচিৎ হবে পথটি বন্ধ করার। নাহয় বড় ধরনের সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। দেশ উন্নত হয়েছে ঠিক কিন্তু উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে অর্থনীতিকে বাচিয়ে রাখতে হবে। বিশ্ব বানিজ্য করোনার কারনে বন্ধ প্রায়। অনেকেই সাবধান করেছেন। মনে হয় সরকারও অনুমান করছে এখন। লুটেরা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির মূখে পরতে পারে বাংলাদেশ।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।