সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কারা হেফাজত থেকে তিনি মুক্তি পান।
গত ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ১৫টি মানহানির মামলায় ছয় মাসের জামিন দেন। এর মধ্যে ১৪টি মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে করা মানহানির ১৪ মামলায় ব্যারিস্টার মইনুলকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ওই আদেশের ফলে শেরপুর, কুড়িগ্রাম, ভোলা, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, মাগুরা, নড়াইল, চট্টগ্রাম, যশোর ও নেত্রকোনায় মইনুলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মোট ১৪ মামলায় জামিনে মুক্তি পান তিনি।
জামিন স্থগিতের আবেদনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির এবং মইনুল হোসেনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
সেসময় খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, মইনুল হোসেন এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে মন্তব্য করায় ২৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ও বাকি ২২টি মামলা হয় মানহানির। মানহানির অভিযোগে বিভিন্ন আদালতে দায়ের করা ১৫টি মামলায় ব্যারিস্টার মইনুলকে হাইকোর্ট জামিন দেন। এর মধ্যে ১৪টি মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে এসব মামলায় তাঁর জামিন বহাল রয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আরো তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করায় এখন তাঁর কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকছে না।’ বাকি পাঁচটি মামলায় আগেই জামিন পান ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর একাত্তর টিভির একটি টক শোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি লাইভে যুক্ত হওয়া ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন- ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কি না?’
মইনুল হোসেন এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্যের পর মাসুদা ভাট্টি নিজে একটি মানহানির মামলা করেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ অবস্থায় রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় গত বছরের ২২ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরায় জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।