ঘরের উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিতে বাঁধা দেয়ায় সহোদর ও প্রতিবেশির হামলায় আনকার মিয়া ও তার স্ত্রী, প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানসহ পরিবারের চারজন আহত হন। এঘটনায় আদালতে মামলা দেয়ায় প্রতিপক্ষ ফের হামলা চালিয়ে আনকার মিয়াকে জখম করে ঘরের মালামাল লুট ও বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় কমলগঞ্জের গোপীনগর গ্রামে সহোদর এলাইছ মিয়া ও তার সহযোগীরা হামলা ও নির্যাতিতদের বাড়ি ছাড়া করেন।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, গোপীনগর গ্রামের বশির মিয়ার ছেলে দরিদ্র আনকার মিয়ার টিনসেডের ঘরের চালা ভাঙ্গা, ছিদ্র ও তালাবদ্ধ। ঘরের উপর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাইলে আনকার মিয়া বাঁধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার আপন সহোদর এলাইছ মিয়া ও তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে আনকার মিয়া (৪৫), স্ত্রী রানী বেগম (৩৮), প্রতিবন্ধী মেয়ে বুশরা বেগম (১৫) ও শিশু কন্যা আয়শা বেগম (৮) কে আহত করে। এঘটনায় আনকার মিয়া বাদি হয়ে গত ১লা আগষ্ট মৌলভীবাজার আদালতে মামলা দায়ের করেন।
নির্যাতিতনের স্বীকার আনকার মিয়া, তার স্ত্রী রানী বেগম বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলাকারীরা বাঁশের বেড়া দিয়ে আমাদের বাড়ির রাস্তা বন্ধ করতে চাইলে প্রতিবাদ জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আপন সহোদর এলাইছ মিয়া (৪০), জুয়েল মিয়া (৩২), ছামাদ মিয়া (৩৫), এলাইছ মিয়ার ছেলে আতিক মিয়া (২০) ও প্রতিবেশী বুলবুল আহমদ (৩০), বদরুল আলম শিমুল (২৫) সহ প্রতিপক্ষের লোকজন গত ২৪ জুলাই বিকাল ৫টায় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাতে আমরা স্বামী-স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী শিশুদেরও আহত করে।
আনকার মিয়া আরও বলেন, এ ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত মামলায় কোর্ট থেকে বাড়ি ফেরার পথে ২৭ সেপ্টেম্বর ২য় দফায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে পরে ঘরের ধান, গরু-বাছুর নিয়ে যায় ও আমাদের বাড়ি ছাড়া করে। মামলা দেয়ার কারণে এখন পর্যন্ত আমরা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দু:খ-কষ্টে দিনযাপন করছি। অন্যের বাড়িতে থেকে মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
এলাকার প্রাক্তন ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান, সুন্দর আলী, মিনার মিয়া, মাসুক মিয়া, ডা. নূরুল ইসলাম মসুদসহ গ্রামবাসীরা আনকার মিয়ার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন গ্রামবাসীর কথা শুনতে চায় না।
অভিযোগ বিষয়ে অভিযুক্ত বুলবুল আহমদ, বদরুল আলম শিমুল, ময়না মিয়া ও আছমা বেগম বিদ্যুতের লাইন নিয়ে তাদের ভাই ভাইয়ের বিরোধে আমাদেরকে অন্যায়ভাবে জড়ানো হয়েছে।
এব্যাপারে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুর রহমান গাজী বলেন, কোর্ট থেকে আনকার মিয়ার মামলা তদন্তের জন্য আসছে। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।