রাজনীতিতে তিনটি বিষয় জরুরী (এক) নৈতিকতা (দুই) দেশপ্রেম এবং (তিন) সততা। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনটারই খুব অভাব। মিথ্যা নির্ভর রাজনীতি স্থায়ী হয় না। কথা এবং কাজের অমিল হলে জনগনও রাজনীতিকে গ্রহন করেনা। নেতারাও যথাযথ সম্মান পাননা জনগনের কাছে। সৌজন্যতাটি হারিয়ে গেছে। অমানবিক ভাবে অসত্য প্রচারনায় আক্রমন করে প্রতিপক্ষকে। প্রতিযোগিতা চলে কে কত বেশী গাল দিতে পারে একে অন্যকে। ৭৫ এর পর রাজনীতি এভাবেই আস্থা হারিয়েছে জনগনের কাছে।
আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বিগত নির্বাচনে অঙ্গিকার করেছিল দুর্নীতি দমনের। সেই অভিযানটি শুরু হওয়ার পর থেকেই বি এন পি জোটের নেতারা বিদ্রুপ সমালোচনা করে চলেছে। বার বার দাবী করছে অভিযুক্তদের বিচার হবেনা। ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের অনেকেই ধরা পরেছে এবং জেল জরিমানাও হয়েছে। ক্যসিনো মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বা প্রতারনা মামলায় অভিযুক্তরা দলীয় পরিচয়ে ছাড় পায়নি। ধর্ষনের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে নতুন আইন পাশ হয়েছে। এসব মামলার বিষয়ে অসত্য প্রচারনা চালিয়ে জনগনকে উষ্কে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বি এন পি। অথচ তাদের দলের দুই শির্ষ নেতাই অর্থ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এখন জেলে, অন্যজন পলাতক। দলের নেতার অপরাধের জন্য কখনো লজ্জাবোধ করেনা বি এন পি। ২০১৯ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহন করেও প্রচারনায় নামেনি। ভোট কেন্দ্রেও যায়নি। এখন সরকারকে অবৈধ বলে প্রচারনা চালাচ্ছে। সরকার কেন অবৈধ তা প্রমান করার কোন আইনগত যুক্তি থাকলে উচিৎ জনগনের সামনে তা উপস্থাপন করা। আদালতে গিয়ে তা প্রমান করা। তা না করলে জনগনের সাথে প্রতারনার দায়ে বি এন পি নেতাদের বিচার হওয়া উচিৎ।
সত্যটি হল, বি এন পি এখন নেতৃত্বের কোন্দলে বিভক্ত। কর্মবাহিনী দলীয় কোন্দলের কারনে বিভ্রান্ত। কেউ জানেনা কার পক্ষে তারা শ্লোগান দিবে। নীজেরাই মারামারি করে মাথা ফাটাচ্ছে। লন্ডনে থাকা নেতাকে ঘূষ না দিয়ে কোন কমিটি অনুমোদন পায়না। স্থায়ী কমিটির সদস্য পদে দাম হাকিয়েছেন দশ কোটি টাকা। এমন দলকে জনগন সমর্থন দিবে কোন ভরসায়? দলের নেতারা জানে গঠনতান্ত্রিক পন্থায় তারা ক্ষমতায় যেতে পারবেনা তাই, নগত ইস্যু নিয়ে আন্দোলন জমাতে চায়। একটি অঘটন ঘটিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে চায় বি এন পি। জনগনের হয়ে দলটি কোন ইস্যুকেই সামনে তুলে আনতে পারেনি। সরকারের সমালোচনা করা ছাড়া জনস্বার্থ বিষয়ক রাজনীতিও তারা দেখাতে পারেনি। বি এন পি’র ভুল রাজনীতির খেসারত দিয়েছে দেশের ষোল কোটি মানূষ। এখন এই দলটির প্রতি মানূষের ( দলের কর্মী বাহিনীরও) আস্থা নেই। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে বি এন পি’কে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সামরিক ছাউনিতে জন্ম নেওয়া বি এন পি একাধিকবার রাষ্ট্র পরিচালনা করলেও এখন রাজনীতিতে দেউলিয়া।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
১৪ অক্টোবর ২০২০।