রাজনৈতিক উত্তরাধিকারিত্ব শুধু বাংলাশেই নয় দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। ভারতে কংগ্রেস দল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিল। কংগ্রেসের নেতৃত্বে সেদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরু কংগ্রেসেরই নেতা ছিলেন। নেহেরুর মৃত্যুর পর তার কন্যা ইন্দ্রিরা গান্ধী ক্ষমতায় আসিন হতে পারেননি কিন্তু লালবাহাদুর সাশ্রীর মৃতুর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন নেহেরু কন্যা ইন্দ্রীরা গান্ধী। টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মাঝে একবার কংগ্রেস হেরে যায় কিন্তু আবারও তিনি ক্ষমতায় আসেন-প্রধানমন্ত্রী হন। ইন্দ্রীরা গান্ধী বিদ্রোহী সেনার গুলিতে নিহত হওয়ার পর তারারই বড় ছেলে বিমান চালক রাজীব গান্ধী মায়ের আসনে আসিন হন। তিনিও বোমা হামলায় নিহত হন।
রাজীবের মৃত্যুর পর তার ইটালিয়ান বংশভুত স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হননি কিন্তু, দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন তাদের ছেলে রাহুল গান্ধী দলের কান্ডারী। রাহুল দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই কংগ্রেসের পতন শুরু হয়েছে।এখন প্রাচীনতম এই দলটি সংসদের বিরোধী দলের আসনটিও নিশ্চিত করতে পারেনা।
✪ আরও পড়ুন: বি এন পি’র রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: ড: ইউনুস
✪ আরও পড়ুন: যুদ্ধটি সহজ হবে না!
✪ আরও পড়ুন: বিএনপি দলের এক দফা
পাকিস্তানেও জুলফিকার আলী ভূট্টোর মৃত্যুর পর কন্যা বেনজির ভূট্টো দলের নেতৃত্ব পান। দুইবার প্রধানমিন্ত্রীও হয়েছেন বেনজির ভুট্টো। কিন্তু আততায়ীর গুলিতে বেনজির ভূট্টো নিহত হবার পর তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বিলোয়াল ভুট্টোই দলের দায়িত্ব পান। কিন্তু রাজনীতিতে বেলোয়াল ভোট্টো নানা বা মায়ের মত চমক দেখাতে পারেননি। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দিয়ে শাহাবাজ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইমরানের পক্ষে জনজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় মোকাবেলা করতে না পেরে শাহবাজ শরিফ বড় ভাইয়ের মত লন্ডনে পারি জমিয়েছেন। সঙ্গে পিপিপি নেতা বিলোয়াল ভুট্টোও। পিপলস পার্টির অবস্থা এখন আলতাফের এম কিউ এম এর চেয়েও নাজুক অবস্থানে।
বাংলাদেশেও জিয়া নিহত হওয়ার পর তার বিধবা পত্নী খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে টেনে আনা হয়েছিল কৌশলগত কারনে। এই প্রচেষ্টা সব বিফলে যায়নি। বেগম জিয়া তিন তিন বার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন (একবার বিতির্কিত)। এতিমের অর্থ আত্নসাতের মামলায় অভিযুক্ত বেগম জিয়া জেলে যাওয়ার আগে নিজের ছেলেকেই দলের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। অন্য কোন নেতাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তারেক জিয়া দলের দায়িত্ব পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিত্য বিবৃতি দিয়ে দলকে বিব্রত করে ফেলেছেন। রাজনীতির শিষ্ঠাচার ভঙ্গ করে জাতির পিতা আর প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তারেক যে সব উক্তি করেন দলের নেতারা বিব্রত হন। নিজ দলের শির্ষ নেতাদের সঙ্গেও তারেকের আচরণ নেতাসুলভ নয়। নেতা-কর্মীদেরকে মনে করেন তার অধীনস্থ কর্মচারী। অথচ বি এন পি’তে অনেক অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ রয়েছেন। অনেকে স্ব স্ব ক্ষেত্রে ব্যপক সুনাম অর্জন করেছেন। অনেকের নাতির বয়সী হবেন তারেক জিয়া।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
একজন রাজনৈতিক নেতার অনেকগুলি গুন থাকা প্রয়োজন। তার মধ্যে অন্যতম হল নিজেকে একজন ভাল মানুষ প্রমান করা। আদর্শগত বিভেদ থেকেও অন্যকে অসম্মান না করা। দলের আদর্শটি বিবেচনা করার মূল দায়িত্ব জনগনের। রাজনীতিতে আরও একটি বিষয় অত্যন্ত জরুরী-অভিষেকটি কিভাবে হল আর কেমন হল! একবার খারাপ ভাবে উপস্থাপিত হলে তা আর কখোনই মুছে ফেলা যায়না। রাজনীতিতে তারেকের উত্থানটি ভালভাবে হয়নি। হাওয়া ভবন, ১০% পার্সেন্ট খাম্বার ঘটনা (সত্য মিথ্যা জানিনা) মানুষের মুখে মুখে। দলের নেতারাও কেউ কেউ এসব বিষয়ে মুখ খুলেছেন। এরপর ১০ ট্রাক অস্ত্র, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা সহ আরও অনেক বিষয় সমালোচিত তারেক জিয়া। এসব সমালোচনার কোন সুষ্ঠু জবাব তারেক কিংবা দল আজও কেউ দেয়নি।
এমন একজন ব্যক্তি যখন একটি বড় দলের নেতা নির্বাচিত হন এবং দলের নেতারা তাকে হবু প্রধানমন্ত্রী সম্বোধন করেন তখন, দলের শিক্ষিত নেতাদের বিষয়েও মানুষের মনে প্রশ্ন নাড়া দেয়। ভারতে রাহুল গান্ধীর কিংবা পাকিস্তানের বিলোয়াল ভুট্টোর অন্তত শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কেউ কোন কথা বলেনি। কিন্তু তারেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে। এমন একজন ব্যক্তি যার কোনই গুণাবলী নেই, যার শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই সেই ব্যক্তিটিকে যারা ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী বানাতে চান, তাদের উদ্দেশ্যটি রাজনীতি নয় অন্যকিছু। বিষয়টি জনগনের কাছে যতক্ষন পরিস্কার না হবে ততক্ষন বি এন পি কোন আন্দোলনে জনসমর্থন পাবে মনে হয়না। তাই বি এন পি নেতাদের উচিৎ হবে বিষয়টি জনগনের কাছে খোলাসা করা।
✪ আরও পড়ুন: রাজকাহন
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
*** আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:০৬ | বৃহস্পতিবার ***
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি