আজ বুধবার (১২) জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এই দিবস পালন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে ও শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাসহ সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিশুদের জন্য একটি সুন্দর, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে উঠুক এমন প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, শিশুর যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করতে সকল প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে শিশুশ্রমমুক্ত করতে হবে।
‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন, শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করাসহ শিশুশ্রম নিরসনে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো সচেষ্ট হতে হবে। তিনি বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে একযোগে কাজ করার এখনই সময়। এসডিজি ৮.৭ অর্জনে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
২০০২ সালে সর্বপ্রথম দিবসটি পালন করে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)। শিশুশ্রমের কারণে শিশুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরাই ছিল এর উদ্দেশ্য। এরপর প্রতিবছরই দিবসটি পালিত হয়।
এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে সব ধরনের শিশুশ্রম থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ থেকে সব ধরনের শিশুশ্রম নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্য অর্জনে ইতোমধ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি, ২০১০’ ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ’ কাজ করছে। সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শিশুশ্রম সমীক্ষা-২০০৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩২ লাখ। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ২০২৩ সালে শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুযায়ী শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ১৭ লাখে দাঁড়িয়েছে।
আজ বিভিন্ন গণমাধ্যম দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সারা দেশে কলকারখানা ও শ্রমঘন এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার টানানো হবে। শিশুশ্রম নিরসনে সচেতননামূলক লিফলেট বিতরণ করা হবে। বিভিন্ন শিল্প এলাকার কলকারখানায় শিশুশ্রম নিরুৎসাহিত করতে বিশেষ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম