বিশ্বের বৃহত্তম থ্রি জর্জেস বাঁধ প্রবল বন্যায় হুমকির চরম মুখে পড়েছে। গত কয়েকদিনের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে ধারণক্ষমতা প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে দেশটির বৃহত্তম জলাধারটি। চাপ কমাতে বৃহস্পতিবার পানি ছাড়ার পরিমাণ রেকর্ড ৪৮ হাজার ঘনমিটার বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাড়তি প্রবাহের বিপদ এড়াতে প্রয়োজনে এর পরিমাণ আরও বাড়ানো হতে পারে।
রয়টার্সর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এ বছর ইয়াংজি অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত এর প্রভাবে অন্তত ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতি সেকেন্ডে ৭৫ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়েছে ইয়াংজি নদীর এ বাঁধ দিয়ে। রাতারাতি সেখানে পানির উচ্চতা দুই মিটারেরও বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫ দশমিক ৬ মিটারে, যা পূর্ব সতর্কতা মাত্রার চেয়ে অন্তত ২০ মিটার বেশি। জলাধারটি সর্বোচ্চ ১৭৫ মিটার গভীরতার পানি ধারণে সক্ষম।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ থ্রি জর্জেস প্রকল্পের গবেষক ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডেসিরি টুলোস বলেন, তারা বাঁধের পানি উপচে পড়া ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। পানি উপচে পড়া হলো বাঁধের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। কারণ এতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয় এবং পুরো জিনিসটি ভেঙে পড়তে পারে।
২ দশমিক ৩ কিলোমিটার চওড়া ও ১৯২ মিটার উচ্চতার থ্রি জর্জেস বাঁধটির কাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনই নয়, ভয়াবহ বন্যা থেকে চীনের মানুষদের রক্ষা করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
চীনের সরকারি হিসাবে, বাঁধটি এ বছর ১০০ বিলিয়ন ঘনমিটারেরও বেশি বন্যার পানি আটকে দিয়েছে এবং প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষকে ঘরছাড়া হওয়া থেকে রক্ষা করেছে। এই একটি বাঁধেই বন্যার পানিপ্রবাহ অন্তত ৩৪ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনা কর্মকর্তারা।
তবে বিরোধীদের দাবি, থ্রি জর্জেস বাঁধের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সীমিত। ভবিষ্যতে এটি আরো বড় বিপদের কারণ হতে পারে।