দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এক নারী ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দলের বাইরে থাকা অন্য এক নারী ক্রিকেটার এমন প্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, লতাকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়া ব্যক্তি বাংলাদেশেরই আরেক ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার, যিনি এখন জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। এই ঘটনার একটি অডিও রেকর্ডটি দেশের এক বেসরকারি টিভি চ্যানেল ফাঁস করেছে। ওই টেলিভিশন চ্যানেলটি অন্য একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লতা মণ্ডলকে ফোন করে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন দলের বাইরে থাকা সোহেলী আক্তার।
ফাঁস হওয়া ওই অডিও রেকর্ড থেকে শোনা যায়, লতা মণ্ডলকে খারাপ খেলার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে লতাকে লাখ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনি যদি হিট আউট হন তাহলে পাবেন ২০ লাখ টাকা। আর যদি স্ট্যাম্পিং হন তাহলে তাকে দেয়া হবে ৫ লাখ টাকা।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
তবে সোহেলী আক্তারের ফাঁদে পা দেননি লতা মণ্ডল। এই প্রস্তাব শোনার সঙ্গে সঙ্গেই নাকচ করে দেন এবং ঘটনার বিবরণ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানায়। বিসিবিও দ্রুততর সময়ের মধ্যে বিষয়টি আইসিসির দুর্নীতি দমন শাখাকে অবহিত করেন। ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘ইএসপিএন ক্রিকইনফো’কে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘আকসুই এখন এ বিষয়ে তদন্ত করবে এবং অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’
সুজন আরও বলেন, ‘আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটই এই বিষয়টি দেখভাল করছে। আমাদের খেলোয়াড়রা খুবই ওয়াকিবহাল যে তাদের কী করতে হবে আর কী করতে হবে না। যদি ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব আসে তাদের কাছে, তাহলে সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক যে আইসিসি এসিইউকে (আকসু) জানাতে হবে, সে ব্যাপারে তারা জানে। এখন এটা বিসিবির হাতে নয়। বিসিবি তদন্তও করবে না। আমরা যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে সে নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য করবো না। প্রকৃতিগতভাবেই এ বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর।’
এদিকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন সোহেলী আক্তার। তিনি ওই টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, ‘আকাশ’ নামের এক জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। কোনো ভুল করেননি বলেও দাবি তার। তিনি কেবল মধ্যস্থতা করেছেন।
ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, সোহেলী লতাকে বলছেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি তোমার কোনও ক্ষতি করব না। তোমার যখন ইচ্ছা হবে ফিক্সিং করবে। যখন চাইবে না, করবে না। কোন ম্যাচে ফিক্সিং করবে, সেটা তোমার ব্যাপার। ধরো তুমি একটা ম্যাচে ভালো খেললে। তাহলে পরের ম্যাচে ফিক্সিং করতে পারো। তুমি স্ট্যাম্প-আউট বা হিট উইকেট হতে পারো। যদি ২০-৩০ লাখের বিনিময়ে হিট উইকেট হতে অসুবিধা থাকে, তবে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে স্ট্যাম্প-আউট হতে পারো। তোমার যদি এটা কম মনে হয়, তবে বলতে পারো। আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। মনে রেখো, এটা কথাটা শুধু তোমার-আমার মধ্যে থাকবে।’
জবাবে লতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ‘বান্ধবী আমি এগুলোর মধ্যে নাই। তুমি আমাকে এগুলো বইলো না। এগুলো আমাকে দিয়ে কখনও হবে না। আমাকে এসব বইলো না, প্লিজ।’ প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) জানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন লতা।