বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত রক্তদাতা-রক্তগ্রহীতা মিলনমেলায় থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজকর্মীগণ। গতকাল বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান সবাই।
দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগী ও দুই শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতার ব্যতিক্রমী এক মিলনমেলায় থ্যালাসেমিয়া রোধে বাহক-বাহক বিয়ে বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোধে রক্ত পরীক্ষার বিকল্প নেই। পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্ণয় ও তালিকাকরণ জরুরি। বিশেষ করে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় রক্ত পরীক্ষার সনদ বাধ্যতামূলক করতে পারলে দেশকে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত করার ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সফলতা আসবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএসএমএমই’র মেডিসিন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে থ্যালাসেমিয়া রোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরবেন বলে আশ্বাস দেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
স্বেচ্ছা রক্তদাতারা নীরবে তাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রক্ত দান করে যান। রক্তদানের সময় তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানেন না, তার রক্ত কোন মানুষটির শরীরে বইবে। একইভাবে রোগীদের কাছেও অচেনা থেকে যান রক্তদাতারা। দেশে প্রথমবার রক্তদাতা-গ্রহীতার এ মেলবন্ধনে রক্তগ্রহীতারা স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। আবেগাপ্লুত হয়ে সজল নয়নে ধন্যবাদ জানান। রক্তদাতারাও নিজেদের দায়িত্ববোধ আর ভালো লাগার কথা জানিয়ে বলেন, রক্তদানের মাধ্যমে এ সেবা দিতে পেরে তারা গর্বিত ও আনন্দিত।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের উপদেষ্টা সৈয়দ দীদার বখত। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বলেন, বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষার কারণে তারা থ্যালাসেমিয়াকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে। অদূর ভবিষ্যতে একইভাবে বাংলাদেশও একদিন থ্যালাসেমিয়ামুক্ত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অপর বিশেষ অতিথি হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. এ কে মো. মোস্তফা আবেদীন তার বক্তব্যে দেশের সকল থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় এবং তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। এসময় ৪১ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতা উম্মে সালমা মৌসুমী ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রক্তগ্রহীতা মায়িশা বিনতে শাহাদৎ তাদের অনুভূতি ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন