ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী এবং অন্যতম প্রধান শহর। ঘনবসতি এবং অপরিকল্পিত নগরায়নের কারনে ঢাকা এখন বিপদজনক শহর। যানজট, বায়ুদূষণ, জনসংখ্যা আর শব্দদূষণের কারনে ঢাকা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। রাজধানী শহরের যোগ্যতা হারিয়েছে বহু আগেই। নগরবিদরা পরামর্শ দিলেও কোন উপযুক্ত শহর নেই রাজধানী স্থানান্তরীত করার। তবে প্রশাসনিক দপ্তর স্থানান্তর করার কিছু চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু তা কার্যকর হয়নি মূলত: যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে।
ছোট্ট দেশটিতে ৫০ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুনেরও বেশী। আবাসন আর নদী ভাঙ্গনে জমি সংকুচিত হয়ে গেছে।আবাসনের জমিও যথেষ্ঠ নেই, তার উপর কৃষি উৎপাদন ছাড়া দেশ আমদানি নির্ভর হয়ে পরবে! এমন বাস্তবতায় রাজধানী স্থানান্তর সম্ভব নয়। তবে পদ্মা সেতু নির্মান হওয়ায় দক্ষিন বঙ্গে নগর গঠনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন কোন শিল্প এলাকা হলে দক্ষিন বঙ্গেও কলকারখানা নির্মিত হবে। জনশক্তি স্থানান্তরিত হবে। কম খরচে পন্য উৎপাদন করে মুনাফা পাবে শিল্পমালীকরা। এই বাস্তবতাকে লক্ষ্যে রেখে কোন সরকারী দপ্তর স্থানান্তারিত হলে ঢাকায় জনসংখ্যা চাপমুক্ত হবে। যানজটে যে কর্ম সময় বিনষ্ট হচ্ছে তা নিরসনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এখন গুলশান থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগে ৩ ঘন্টারও বেশী (জ্যমে পরলে)। পদ্মা সেতু দিয়ে ফরিদপুর থেকে মতিঝিল আসা যাবে ২ ঘন্টায়। শিল্প এলাকার পাশাপাশি শিক্ষা আর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হলে খরচ বাঁচাতে নিজ গ্রামে থেকেই কর্মের সন্ধান করবে মানুষ। বিদ্যুৎও এখন সরবরাহ হচ্ছে সর্বত্র। টঙ্গি, সাভার ছেড়ে এখন শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে মানিকগঞ্জেও। এই কারখানা ফরিদপুরে হলে উৎপাদন খরচ বাচিয়ে রপ্তানী শিল্প অধিক মুনাফা করবে। পন্য যোগাযোগে এই অঞ্চলটিই এখন সহজলভ্য এবং স্বল্প খরচের। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পদ্মার পাড় ঘেষে বিনোদন কেন্দ্র জমে উঠেছে। যারা কখনো ভাঙ্গার নামটিও শোনেনি তারাই এখন ব্যস্ত শহর ঢাকা ছেড়ে ভাঙ্গা চৌরাস্তা দেখে মুগ্ধ হন। বিলাসী ঢাকা ছেড়ে মানুষ এখন পদ্মার পারের মনোরম দৃশ্য দেখতে যায়। সেতু পার হয়ে ভাঙ্গার ভাঙ্গা রেস্তোরায় বসে ইলিশ ভাজা খায় আনন্দে। রাজনৈতিক লক্ষ্য আর দুরদর্শিতা থাকলে এভাবেই নগর-দেশ বদলে যায়। বাংলাদেশ বদলে গেছে এখন শুধু উদ্যোগ নিতে হবে পরিকল্পিতভাবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা।