তারকাখচিত আবাসিক হোটেল সদৃশ্য সেবার পশরা বসিয়েও সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারছে না কোন কোন বেসরকারি হাসপাতাল। ভুল চিকিৎসায় হয়রানি ও মৃত্যুভীতি রোগীদের বিদেশমুখী করছে ব্যাপকভাবে। এ অবস্থায় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নীরিক্ষা ও হাসপাতালে প্রতিটি মৃত্যুর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিও বার্তাটিতে বলা হচ্ছে নাসিরউদ্দিনের কথা। লিভারের জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগে পার্শ্ববর্তী দেশের চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছিলেন। হঠাৎ অস্বস্তি বোধ করায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে দ্রুত ভর্তির পাশাপাশি ভয় দেখিয়ে ডায়ালাইসিস করতে বাধ্য করেন চিকিৎসক। ডায়ালাইসিসের সময় সিভিয়ার ব্রেইন স্ট্রোক করে এখন কাউকেই চিনতে পারছেন না রোগী। সিটিস্ক্যান ও নিউরোলজি চিকিৎসককে দেখাতে চাইলেও রাজি হননি অভিযুক্ত চিকিৎসক।
অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সময়টিভির পরিচয় পাওয়ার পর আর ফোন ধরেননি তিনি। ক্যামেরায় এখনই কথা বলতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে রিপোর্ট দিতে পারি না। এটা মেডিকেল ম্যাটার, সময় লাগবে। রোগী আমাদের কন্ট্রোলে আছেন। এটা নিয়ে একটা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় গত পাঁচ বছরে ৫০০ রোগীর মৃত্যুর খবর মিললেও প্রকৃত সংখ্যা আরো কয়েক গুণ। এসব ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের তেমন কোনো নজিরও নেই।
গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ডাক্তার যে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন সেটাতে যাচাই-বাছাই করা দরকার আছে। হাসপাতালে রোগী মারা গেলে সেটাকে অডিট করতে হবে। কাগজপত্র চেক করতে হবে।
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বার বার ঘটতে থাকা এসব ঘটনায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে দাবি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, যদি আমাদের তদন্তে ধরা পড়ে তখন আমরা সেই প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে অথবা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই।
ভুল চিকিৎসা রোধে প্রথম থেকেই অপচিকিৎসা বন্ধে সতর্ক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি দোষীকে শাস্তি দেবার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সহযোগীর মনোভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন তারা।