বিদ্যুৎ যে বেশি ব্যবহার করবে, তাকে মূল্য বেশি দিতে হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতে অনেক উৎপাদন খরচ। আমরা কিন্তু ভর্তুকি দিচ্ছি। তবে এখন থেকে যে বেশি ব্যবহার করবে, তার মূল্য বেশি দিতে হবে। সেভাবেই করতে চাই।
আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
জনপ্রতিনিধিদের জনগণের আস্থা অর্জন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যাদের পুনর্বাসন করে দিয়েছি। তাদের খোঁজখবর নিয়েন। তাতে আপনাদের লাভ আছে। তাদের আস্থা অর্জন করলে নির্বাচনে ভোটটা পাবেন। জনপ্রতিনিধিকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকের দিকেও খেয়াল রাখবেন। কাজগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়। ওষুধ যাতে যথাযথভাবে বণ্টন হয়। সেদিকে খেয়াল রাখলে মানুষ উপকৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখন আমরা একটি কমিশন গঠন করি। ৯৬ সালে যখন সরকারে আসি তখনই আমরা ওয়ার্ড থেকে নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে, উপজেলা, জেলা পর্যন্ত আইন পাস করি। জেলা পরিষদ আইন সেসময় করে দেই। জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে উন্নয়নের সার্বিক কাজ হয়, সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের আত্মসামাজিক উন্নয়ন এবং শোষণ থেকে রক্ষা করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেন। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্বভার তিনি হাতে নেন। তার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের মানুষের অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থা করা; সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি স্বাধীনতা পর আমাদেরকে একটি সংবিধান দেন। মাত্র ১০ মাসের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়।
সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আবারও আমরা ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনকে শক্তিশালী করি। জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে যেন এগুলো গড়ে ওঠে সেই ব্যবস্থাটা আমরা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন। আমরা যখন ২০০৮-এ ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমরা সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছি। প্রথমে তথ্যকেন্দ্র পরে ডিজিটাল সেন্টার করি। আজ সারা দেশে প্রায় ৮ হাজারের মতো ডিজিটাল সেন্টার আছে। যেখান থেকে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সমগ্র গ্রামবাংলা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগটাও আমরা করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেল। দাম বেড়ে গেল। এ জন্য তখন থেকে সবাইকে আহ্বান করেছিলাম, সবাইকে উৎপাদন করতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। এ সময় সমবায়ের মধ্য দিয়ে সমন্বিত চাষের গুরুত্বও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, খাল-বিল নদী-নালাগুলোকে রক্ষা করতে হবে। একটা পুকুর দেখলেই সেখানে ভবন করতে হবে, এই চিন্তা বাদ দিতে হবে। জলাধার আমাদের দরকার। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোনো প্রকল্প নেওয়ার জন্য দেবেন না। সেটা যথাযথ কাজে লাগবে কি না, দেখে দেবেন। কোনো প্রকল্প ব্যক্তির উপকার চিন্তা করে নয়, মানুষের কল্যাণের দিকে চিন্তা করে নিতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, পানির ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। সেখানে ফিল্টার দেওয়া হচ্ছে। এগুলো একবার করে দেওয়া হলে আজীবন চলবে না। এটার দিকে জনপ্রতিনিধিদের নজর রাখতে হবে। এটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, সংস্কার ও সংরক্ষণ করতে হবে। এটা জনপ্রতিনিধিদের করতে হবে। কারণ সরকারি কর্মকর্তারা তো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরি করে, এরপর শেষ। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা আছে, তাদের দেখতে হবে। তবে, সরকারি কর্মকর্তারাও বিষয়টা দেখবেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এটার পরিষ্কার হচ্ছে কি না।
এদিন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. লায়েব উদ্দিন লাভলু, পঞ্চগড় পৌরসভা মেয়র জাকিয়া খাতুন ও জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ লাভলু প্রমুখ।
আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৩৫ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি