বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের জোট সরকারের পতন চায়। তত্বাবধায়ক নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন চায়। বিএনপি’র এই দাবী নতুন নয়। বিগত নির্বাচনে বিএনপি’র লজ্জাজনক পরাজয়ের পর থেকে দলটি এই দাবী করে আসছে। “রাতে ভোট হয়ে গেছে” এই প্রচারনাটিও নির্বাচনের পরে কেউ বলেনি। অনেক পরে এই প্রচারনাটি শুরু হয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী উত্থাপিত হয়েছে আরও পরে। সরকারের মেয়াদ যখন প্রায় শেষ তখন তারা দাবী করছে সরকারকে পদত্যগ করতে হবে প্রথম। তা না হলে কোন নির্বাচনেই বিএনপি যাবেনা।
প্রথম কথাটি হল সরকার কেন পদত্যগ করবে? পদত্যগ করার মত কোন কিছু কি ঘটেছে? দেশে যে পরিমান উন্নয়ন হয়েছে তা ৫০ বছরেও অন্য কোন সরকার করে দেখাতে পারেনি। দেশের দুর্যোগ মোকাবেলাতেও সরকার ব্যর্থ হয়নি। তাহলে সরকারকে পদত্যগ করানোর এই আন্দোলন কেন? কি কারনে বিএনপি বার বার দাবী করছে বর্তমান সরকার অবৈধ? সরকার যদি অবৈধ হয় তাহলে বিএনপি এই সরকারের অধীনে শপথ নিয়ে সংসদে গেল কেন? কেন তারা তথ্য যুক্তি উত্থাপন করে আদালতে গেল না?
এসব বিষয় কেবল আদালতেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা এবং নির্বাচনের পর পরই তা হওয়া উচিৎ ছিল! তারমানে বিএনপি তাদের পরাজয় ঢাকতে পরিকল্পনা করেই একের পর এক দাবী উত্থাপন করেছে যার কোন ভিত্তি নেই। উপযুক্ত তথ্য উপাত্তও নেই। আসলে নির্বাচন করার মত সাংগঠনিক শক্তি নেই বিএনপি’র। তারা জানে নির্বাচনে গেলে ফলাফল খুব বেশী কিছু বদল হবেনা। তাই দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চায় বিএনপি। গনতন্ত্র ধংস হয়ে গেছে দাবী করে বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধন্যা দিয়েছে বার বার। কিন্তু দেশে গনতন্ত্র না থাকলে দলের নেতারা বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়িয়ে যা বলছেন তা সম্ভব হত না। বিষয়টি বিদেশীরাও বুঝতে পেরেছে। যে কারনে বিদেশী বন্ধুরাও খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি বিএনপি’র পক্ষে।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশীদের ভাষ্য হল “আমরা একটি অংশগ্রহনমূলক স্বচ্ছ নির্বাচন দেখতে চাই”। এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা বিচার করতে হলে তো নির্বাচনে অংশ নিতে হবে! এখানেই ধরা খেয়েছে বিএনপি। এই ইস্যুতে দলের মধ্যেও বিভক্তি শুরু হয়ে গেছে। এক পক্ষ বলছে নির্বাচনে যাবে, এবং অন্য পক্ষ বলছে নির্বাচনে যাওয়া সঠিক হবে না। তারা এখন সরাসরি ক্ষমতায় যেতে চায়। তাই সরকারের পতন হওয়া অনিবার্য।
একটি জড়িপে দেখা গেছে বিএনপি যদি নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেও নির্বাচনে যায় তাহলে ৬০ থেকে ৭০টার বেশী আসনে বিজয়ী হতে পারবে না। তবে স্বতন্ত্র এবং ছোট দল মিলিয়ে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে। এটাই বিএনপি’র জন্য বেশী লাভজনক হবে নির্বাচনে গেলে। আরও একটি সুবিধা বিএনপি নিতে পারে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধিক সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করার সম্ভাবনা বেশী। বিজয়ী হলে এই স্বতন্ত্র এম পি’দেরকে দলে ভিড়াতে পারলে সংসদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বিএনপি। এবং সংসদে বিরোধী দল স্বরব হলে গনতন্ত্র কার্যকর হবে দেশে। জনগন এমন সংসদই দেখতে চায় দেশে।
✪ আরও পড়ুন: রাজকাহন
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
কিন্তু শুরু থেকেই বি এন পি ভুল রাজনীতি করে আসছে। এর মূল কারন নেতৃত্বের শুন্যতা। বেগম জিয়া জেলে আর তারেক জিয়া লন্ডনে। তারেকের অযোগ্যতাই বেশী। তারেক কথা বললে সমালোচিত হয় আর খালেদা জিয়া কথা বলতে পারছেন না।! মির্জা ফখরুলকে দলের নেতা মেনে বিএনপি’র সমর্থকরাও ভোট দিবে না। সরকার পতনের ডাক দিয়ে দলটি এখন বেকায়দায়। তাদের পক্ষে সরকার হটানো সম্ভব নয়। আবার এক দফা দাবী ছেড়ে আন্দোলন থেকে বেড়িয়ে আসাও বিএনপি’র পক্ষে এখন সম্ভব নয়।
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি