মোঃ সদরুল কাদির (শাওন): করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়েছে লটারির মাধ্যমে। সোমবার (১১ জানুয়ারি) অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর অনলাইন দোকানগুলোতে ছিল অভিভাবকদের ভিড়। হন্যে হয়ে খুঁজছেন সন্তানের নাম পছন্দের স্কুলে আছে কি না দেখতে। যাদের সন্তান লটারিতে জিতেছে তারা দারুণ খুশি। যেন যুদ্ধ জয় হয়েছে। আর যাদের সন্তানের ভাগ্যে লটারির শিকে ছেড়েনি তাদের দুঃখের সীমা নেই।
এর মধ্যেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে মেয়েদের স্কুলে তিন ছেলের চান্স পাওয়া নিয়ে। ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফলাফলের তালিকায় এসেছে তিনজন ছেলের নাম। তারা হচ্ছে, ফায়াজ জাহাঙ্গীর ইশমাম, মো. জোবায়েরুল হাসান খান ও ফারাবী ইসলাম। তারা সবাই চতুর্থ শ্রেণিতে মর্নিং শিফটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বলে ফলাফল শিট লেখা আছে।
এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা। চার ছেলে মেয়েদের স্কুলে ভর্তির সুযোগের ঘটনায় চলছে হাস্যরসও।
নাদিরা আক্তার মিতু নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবার ছেলে হয়েও বিদ্যাময়ীতে চান্স পাওয়ার গৌরব অর্জন করলো ভাইটি, Congratulations Brother হাজার কাঁটার ভিড়ে একটি গোলাপ হয়ে বেঁচে থাকো।’
নাট্যকর্মী ও সংগঠক আবুল মনসুর নামে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের সময় বা তার আগে পরে বিদ্যাময়ীতে গিয়ে পড়ার জন্য আমরা মুখিয়ে থাকতাম, কোন কাজের ছুতাতে ওখানে যেতে পারলে নিজেকে বীর হিসেবে মনে করতাম। আজকে সে ভাগ্যের জোরে ওখানে পড়ার সুযোগ পেলো। বাজানরে তুই আমাদের পূর্বের স্বপ্নকে পূরণ করলি, তোকে প্রাক্তন জিলাস্কুলিয়ান হিসেবে অভিনন্দন। জাতির মেধা নষ্ট করার জন্য লটারি নামক খেলার জন্য ধিক্কার জানাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বুদ্ধিজীবীদের। এখন মেধার বিচার রইলো না, ভাগ্য যার মেধা তার।’
সাদিয়া জামান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কপাইল্লা বাজানতো একখান না, তিনখান পাইলাম। হ্যাজাক জ্বালায়া খুঁজলে মনে হয় আরও পাওয়া যাবে। ২৭৭ জন বোনের তিনটা মাত্র ভাই। আজ লটারি ছিলো বলেই এভাবে ভাই বোন মিলেমিশে বিদ্যাময়ী গার্লস স্কুলে পড়ার সুযোগ পেলো।’
সোশ্যাল এক্টিভিস্ট আলী ইউসুফ লিখেছেন, ‘বিদ্যাময়ীতে যেই ছেলে চান্স পাইছে তার ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। লটারি তাকে মেয়েদের সাথে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।’
নওশীন বৃষ্টি নামে একজন লিখেছেন, ‘বাপের নাম দিয়াহালসে নাতো আবার।’
সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেনীতে JANATUL FERDAOUS এবং ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে KRISNA GANGULY দুই বার করে স্থান পেয়েছে। বিষয়টি খুবই ন্যাক্কার জনক।
এই লটারি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। অনেক অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। কারণ এই লটারি কার্যক্রম সম্পূর্ণ গজায়মিল দিয়ে হয়েছে।
বাংলাদেশ সাধারণ জনৈক প্রশ্ন, কারণ অনেক ১৫ বার আবেদন করেছে। তাহলে পিতা ও মাতার নাম ও আইডি নম্বর দিয়ে কেন যাচাই না করে লটারি করা হলো? সূত্রঃ সময় নিউজ/দৈনিক আঁলোর যাত্রা