মো.নাছির উদ্দিন-বাঞ্ছারামপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া এক প্রার্থীর মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন।
গতকাল বুধবার দুপুরে ইউনিয়নের খাককান্দা বাজারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে বাঞ্ছারমাপুর উপজেলার ১৩টির মধ্যে ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত মঙ্গলবার এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিনের নাম ঘোষণা করা হয়। এর প্রতিবাদেই এবং আবদুল মতিনকে রাজাকারপুত্র দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এলাকার নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ছলিমাবাদ ইউনিয়নের খাককান্দি বাজারে এই ইউনিয়ন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আবদুল মতিনের নৌকা প্রতীকের মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবিত শত শত নারী পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল বের করে মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে ছবি সম্বলিত ব্যানারে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আবদুল মতিন রাজাকারপুত্র, সন্ত্রাসীদের গডফাদার, সালিশ বানিজ্যের মূল হোতা লেখা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক বাবুল মিয়া, ওই ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অহিদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব, ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি তনু মুন্সী, ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তার হােসেন, ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম।
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের এই নেতারাসহ বক্তারা বলেন, আবদুল মতিনের বাবা সমন্দর মিয়া মেম্বার ছিলেন রাজাকার। আবদুল মতিন একজন রাজাকারের পুত্র। রাজাকারের পুত্রকে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আর চেয়ারম্যান হিসেবে টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজই করেননি। সকল কাজের জন্যই তাকে টাকা দিতে হয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, গত ২১ অক্টোবর উপজেলার সদরের মাওলাগঞ্জ বাজারে ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছলিমাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাই করতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভোট দেন। ভোটে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল মিয়া ১৩২ ভোট, আব্দুল মতিন ১১৭ ভােট পান।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জালাল মিয়া বলেন, কাউন্সিলে আমি ১৩২ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছি। মতিন দ্বিতীয় হয়েছেন। মতিনের বাবা একজন যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার ছিল। তাই লোকজন তাঁর মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন।
ছলিমাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন বলেন, আমার মৃত বাবার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। এসব ঠিক না। আমার বাবা যদি রাজাকারই হয়ে থাকে তাহলে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেননি কেন? আর গত ইউপি নির্বাচনেই বা আমাকে কেন নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
টাকা ছাড়া কাজ করেন না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ বললে তো আর তাদের মুখ ধরে রাখতে পারবো না।