প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের মানুষের অভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। জীবাণুমুক্ত থাকার ব্যাপারে আগে সেভাবে সচেতন যারা ছিলেন না, তারাও এখন অনেকটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিজেরা নিরাপদ থাকার।
কিন্তু নিরাপদ থাকার চেষ্টা করলেও অজান্তে ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা তো আছেই। কারণ বিভিন্ন কারণে আমাদের বাড়ির বাইরে বের হতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত করোনামুক্ত না হলে এই ভাইরাস দ্বিতীয়বার তাণ্ডব চালাতে পারে। আর দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাস দ্রুত ও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। করোনাভাইরাস পরের বার যদি শীতকালে ছড়িয়ে যায়, তাহলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সে কারণে অতি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হলেও জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায় বাতলে দিয়েছেন জীবাণু ও সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা। আর জনপরিসরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
আসুন সেসব জেনে নেওয়া যাক-
- অন্যদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। এ ক্ষেত্রে কেউ বলছেন তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে, আবার কেউ বলছেন ছয় ফুটের কথা।
- কেনাকাটার মুহূর্তকে বিনোদনের উৎস হিসেবে নেবেন না। কেবল দরকারি জিনিস কিনে বাড়ি ফিরে যান।
- বাইরে বের হয়ে কোনো স্থানের দরজা খোলা কিংবা কোথাও ধাক্কা দেওয়ার কাজে হাতের আঙুল ব্যবহার না করে হাঁটু কিংবা কাঁধ ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, আঙুলে জীবাণু লাগলে তা পরিষ্কারের চেয়ে আপনার পোশাক ধুয়ে ফেলা বেশি সহজ।
- স্বয়ংক্রিয় অপশনের জন্য অপেক্ষা করুন। লিফটে ওঠার পর বোতাম চাপলেও দরজা বন্ধ হয়, আবার না চেপে অপেক্ষা করলেও বন্ধ হয়। এ ক্ষেত্রে আপনি স্বয়ংক্রিয় অপশনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন।
- মোবাইল রাখার ব্যাপারে সচেতন থাকুন। যেখানে সেখানে মোবাইল রাখবেন না। এভাবেও জীবাণু লেগে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- পুনরায় ব্যবহারের ব্যাগ বাড়িতে আলাদা স্থানে রাখুন। পারলে সেটি ধুয়ে রাখুন। এমনকি ব্যাগটি ধরার পর বাইরে বের হলে হাত ধুয়ে বের হন। ব্যাগ নিয়ে বাড়িতে ফিরলেও তা রেখেই হাত ধুয়ে নিন।
- খালি হাতে ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র বের করবেন না। এতে করে হাতে জীবাণু লেগে যেতে পারে।
- ঘর থেকে শুরু করে বাইরে বের হলেও সবকিছু স্পর্শ করা বন্ধ করতে হবে। হতে পারে সেটা দোকানের কোনো জিনিস কিংবা বসে থাকা চেয়ারের সামনের টেবিল। স্পর্শ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
- অনলাইনে কোনো জিনিস অর্ডার দিলেও তা গ্রহণের সময় ডেলিভারি বয়ের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। নেওয়ার সময়ও স্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
- বাড়িতে ঢুকেই প্রতিবার হাত ধুয়ে ফেলুন। আর এটি খুব সচেতনভাবে মেনে চলুন। ময়লা হাতে লাগেনি বলে অবহেলা করবেন না।
- নিজের গাড়ি এবং বাড়িতে জীবাণু নেই বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন না। এগুলো জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
- বাইরে বের হলে টিস্যু, জীবাণুনাশক, হ্যান্ড সেনিটাইজার রাখতে পারেন।
- টাকা লেনদেন করার ব্যাপারে সচেতন থাকুন। টাকায় জীবাণু লেগে থাকে।
- জ্যাকেট, জুতা ও প্যান্টে করোনাভাইরাস লেগে থাকতে পারে। এসব ধুয়ে ফেলা সম্ভব না হলে রোদে রাখুন। সম্ভব হলে একবার ব্যবহারের পর বেশ কয়েকদিন সেগুলো আর স্পর্শ করবেন না।
- বিশেষ করে নাক, মুখ ও চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কখনো চোখে হাত দেওয়ার প্রয়োজন হলে আগে হাত পরিষ্কার করে নিন। এমনকি চোখ হাত দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা পরিষ্কার করে ফেলুন।