নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বৃহত্তর ফরিদপুর এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে গত শনিবার ২৭মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৬ টা) জুমের মাধ্যমে আলোচনা সভা এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্টজনেরা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও সমসাময়িক পরিস্তিতির উপর বক্তব্য রাখেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে কানাডাস্থ বৃহত্তর ফরিদপুরের শিল্পী এবং বাংলাদেশ থেকে রেডিও টেলিভিশনের জনপ্রিয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ এবং কানাডাসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। সর্বদিক বিবেচনায় অনুষ্ঠানটি দারুণ উপভোগ্য ছিল।
সভাটির বিশেষসত্ব ছিল ঐক্যমত ও অত্যন্ত আন্তরিকতা পূর্ণ। অনুষ্ঠানটি পরিচলানা করেন অন্তরীণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ বিপ্লব চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও বক্তাদের ছিলেন কানাডার অন্টারিও প্রদেশের সম্মানিত সংসদ সদস্য মাননীয় ডলি বেগম, লিবারেল পার্টি মনোনীত পরবর্তী নির্বাচনের প্রার্থী মাননীয় আফরোজা হোসাইন, অন্টারিও আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্দা জনাব মোস্তফা কামাল, কানাডা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা আক্তার জানু, আওয়ামী গ্রেটার ফরিদপুর সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব ইউসুফ শেখ, সাধারণ সম্পাদক জনাব সিরাজুল ইসলাম, নেতা ইঞ্জিনিয়ার নওশের আলী, বিপ্লব দেবনাথ, ইম্মাম হোসাইন, সুব্রত কুমার দে, আলম সাইদ, জনাব রেজা, রেজা সাত্তার, মকবুল মোল্লা,সম্মানিত উপদেষ্টা জনাব আলম মোরাল, উপদেষ্টা আব্দুল হালিম মিয়া (এন আর বি টেলিভশন এর চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন উপ জেলা চেয়ারম্যান, বক্তব্য রাখেন কানাডা ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুস সামাদ হাওলাদার [অধ্যাপক (প্রাক্তন)জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি কলেজে, বি সি এস (শিক্ষা)] ও অন্যানো সম্মানিত অতিথীবৃন্দ।
মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে কানাডায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ হাওলাদার।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হাওলাদার বলেন, আওয়ামী লীগের ও অঙ্গসংগঠনের সদস্য ও পদ বা কর্ম কর্তার পদ গ্রহণ করিতে বঙ্গবন্ধু আদর্শের সৈনিকদের “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী” পড়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন এবং তা সর্বসম্মতিক্রমে সভা গ্রহণ করেন। তিনি সভায় বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী গ্রন্থের ১২৫-১২৬ পৃষ্ঠা থেকে উচ্চারিত করেন- “আমি কয়েকদিন বাড়িতে ছিলাম। আব্বা খুবই দুঃখ পেয়েছেন। আমি আইন পড়ব না শুনে বললেন। যদি ঢাকায় না পড়তে চাও, তবে বিলাত যাও। সেখান থেকে বার এট ল’ ডিগ্রি নিয়ে এস। যদি দরকার হয় আমি জমিজমা বিক্রি করে তোমাকে টাকা দিব। আমি বললাম এখন বিলাতে গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন করতে পারব না। আমার ভীষণ জেদ হয়েছে মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন দেখি তার উল্টা হয়েছে। এর একটি পরিবর্তন করা দরকার। জনগণ আমাদের জানত এবং আমাদের কাছেই প্রশ্ন করত. স্বাধীন হয়েছে দেশ, তবু মানুষের দুঃখ কষ্ট দূর হবে না কেন? দুর্নীতি বেড়ে গেছে, খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিনা বিচারে রাজনৈতিক কর্মীদের জেলে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মুসলিম লীগ নেতারা মানবে না………..।
তিনি আরো বলেন, আমরা ছয় ভাই স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র ভাবে অংশগ্রহণ করি। স্বাধীনতার পরে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ হয়েছিল। ছয় ভাই ও বোনদের নিয়ে ঢাকায় পড়াশোনা করা খুবই দুরূহ হয়েছিল, এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে মোহাম্মদপুরে একটি অ্যাপার্টমেন্ট দেন, যে কারণে লেখাপড়া করতে আমাদের অনেক সহায় হয়েছে। তবে পরবর্তীতে স্বাধীনতাবিরোধী সরকার আমাদের সেই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উচ্ছেদ করে দেয় এবং বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে বিদেশে চলে আসতে বাধ্য হই। একুশ বছর আমরা নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে অত্যাচারিত ও নিষ্পেষিত হই। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে আমরা মানসিকভাবে স্বস্তিতে আছি এবং দেশে নানা ব্যবসা-বাণিজ্য, স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি এবং নানা জনকল্যাণমুখী কাজ হাতে নিয়েছি।
আমরা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী হাসিনার জন্য দোয়া করি তিনি যেন দীর্ঘজীবী হন।
অনুষ্ঠানের ২ দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্ট শিল্পী এবং বাংলাদেশ থেকে রেডিও টেলিভিশনের জনপ্রিয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ এবং কানাডাসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। গান পরিবেশন করেন মিসেস জিন্নাত হোসাইন, জনাব এমাম হোসাইন, মিসেস মাহবুব খানম ভূইয়াঁ লাভলী, বাবু সারওয়ার ও বাংলাদেশ থেকে শিল্পী বোরহান উদ্দিনসহ অনেকে।