২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারের বেশি। ওই সময়ে হতদরিদ্রের হার কমে শূন্যের ঘরে নেমে আসবে। আর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) বলছে, নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনাটি চারটি প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হচ্ছে সুশাসন, গণতন্ত্রায়ণ, বিকেন্দ্রীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হবে। বর্তমান বাজারমূল্যে তখন মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি, যা বর্তমানে ১ হাজার ৯০৯ ডলার। এ ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে হতদরিদ্র নির্মূল হবে (৩ শতাংশে নামলে নির্মূল বলা হয়)। আর ২০৪১ সালে হতদরিদ্রের হার কমে দশমিক ৬৮ শতাংশ হবে, যা বর্তমানে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০৪১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এই হার বর্তমানে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ।
অন্যদিকে বর্তমানে মোট রাজস্বের পরিমাণ জিডিপির ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সেটি ২০৩০ সালে বেড়ে ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ হবে। আর ২০৪১ সালে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ দাঁড়াবে জিডিপির ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে ২১ কোটি হবে। তখন মানুষের গড় আয়ু ৮০ বছরে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। শিশুমৃত্যুর হার (১ হাজার জীবিত জন্মে) ২৪ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দিনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করাই হবে চ্যালেঞ্জ। এ জন্য অতিরিক্ত তহবিলের প্রয়োজন হবে, যা দরিদ্র মানুষের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করাসহ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও মানসম্মত শিক্ষার মতো সামাজিক সুরক্ষাবেষ্টনী নিশ্চিত করবে। দারিদ্র্য নিরসনে মানব উন্নয়নের জন্য সাক্ষরতার হার শতভাগ, ১২ বছর পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা এবং সাশ্রয়ী মূল্য চিকিৎসাসুবিধা ও স্বাস্থ্যবিমা স্কিম নিশ্চিত করতে কর্মসূচি নেওয়া হবে।
সূত্র: প্রথম আলো।