করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কাঁচামাল সঙ্কেটে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের গার্মেন্টস শিল্প। গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল পুরোপুরি চীন নির্ভর। গত ২০ দিনে চীন থেকে কাঁচামাল নিয়ে কোনো জাহাজ বাংলাদেশে আসেনি। ফেব্রুয়ারি মাস জোড়াতালি দিয়ে সঙ্কট মেটানো গেলেও মার্চ থেকে বড় ধরনের জটিলতার মধ্যে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের।
নানা সমস্যার মাঝেও দেশের কয়েক হাজার গার্মেন্টস শিল্প কারখানার জন্য বছরে প্রায় ১৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের কাঁচামাল আমদানি হয় চীন থেকে। সে অনুযায়ী চলতি বছরেও খোলা হয়েছে প্রয়োজনীয় এলসি। এর মধ্যে গত ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় চাইনিজ নববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা। যে কারণে চীনে অন্তত ১০ দিন বন্ধ ছিল সব ধরনের লেনদেন। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পুরো চীন এখন এক প্রকার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। আর তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের গার্মেন্টস শিল্পে।
বিজিএমইএ পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, শিপমেন্ট বন্ধ হওয়ায় আমরা ম্যাটেরিয়াল পাব না। যার কারণে আমরা ঝুঁকির মধ্যে চলে গেছি। এরফলে আমাদের পরবর্তীতে এক্সপোর্টগুলো ফেল করবে। শ্রমিকদের কাজ দিতে পারব না।
গার্মেণ্টস ব্যবসায়ীদের মতে, দেশের গার্মেন্টস শিল্পে ব্যবহৃত ফেব্রিক্স-সুতা-এক্সেসরিজ থেকে শুরু করে ডাইং কেমিকেল, ট্যাগ, বারকোড, স্ক্যান রিডার- বোতাম এবং জিপার পর্যন্ত আসে চীন থেকে।
একেতো ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে যেমন আগে খোলা এলসির পণ্য দেশে আসছে না। তেমনি চীন থেকে সাড়া না পাওয়ায় নতুন করেও এলসি খোলা যাচ্ছে না। আগের আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে ফেব্রুয়ারি মাস সামাল দেয়া গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মার্চ মাস থেকে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে তৈরি পোশাক শিল্প খাত।
বিজিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এম চৌধুরী সেলিম বলেন, দ্রুত কোনো সমাধান না হলে মার্চ থেকেই ভালো সঙ্কটে পড়ব আমরা।
প্রতি মাসে চীন থেকে গার্মেন্টেসের কাঁচামাল নিয়ে ৩০টির বেশি জাহাজ আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। কিন্তু করোনা ভাইরাস আতংক শুরু হওয়ার পর থেকে কাঁচামালবাহী জাহাজ আসার পরিমাণ কমেছে আশংকাজনক হারে।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ৪ হাজার ৫৬০টি গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত অর্থ বছরে গার্মেন্টস শিল্প থেকে রফতানি আয় ছিল ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে।