চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছার বলুহ মেলা সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে এক বছরের শিশুকে অপহরণের চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণকারী হিসাবে অপর তিন শিশুর উপর অভিযোগ তোলা হয়েছে। অবশ্য পুলিশ বলছে এটা অপহরণ নয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার হাজারাখানা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, হাজরাখানা গ্রামের বলুহ মেলা সংলগ্ন নুর ইসলামের বসতবাড়ি। তার মেয়ে এ্যানি খাতুন দুই সন্তান লামিয়া (৩) ও আলিফকে (১) নিয়ে বলুহ মেলা উপলক্ষে শ্বশুর বাড়ি থেকে পিতার বাড়িতে আসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে হঠাৎ ওই বাড়িতে বৈশাখী (৯) নামের এক শিশু প্রবেশ করে। সে বাথরুমে যাবে বলে বাড়িতে থাকা এ্যানি খাতুনকে বলে। এ্যানি খাতুন বাথরুম দেখিয়ে বাড়ির সামনে মেলার একটি স্টলের সামনে আসেন। এই সুযোগে শিশু বৈশাখী এ্যানি খাতুনের এক বছরের শিশু আলিফকে ঘরের বারান্দা থেকে কোলে নিয়ে বাড়ির অন্য গেট দিয়ে বের হয়ে যায়।
বিষয়টি এ্যানির বড় মেয়ে লামিয়া দেখতে পেয়ে ছুটে এসে তার মাকে বলে। মা এ্যানি খাতুন দৌড়ে বাড়ি থেকে বেশ দুরে মেলার ভিতর থেকে তার ছেলে আলিফসহ ওই শিশুটিকে ধরে ফেলে।
বিষয়টি জানাজানি হলে জনতার হাত থেকে আটক শিশুটিকে নিয়ে দ্রুত এ্যানি তার পিতার বাড়িতে চলে আসেন। পরবর্তীতে এর সাথে জড়িত আরও দুই শিশু ইয়ামুল (১০) ও নিলুফারকে (৮) স্থানীয়রা আটক করে। খবর পেয়ে থানার এস আই বজলুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনতার হাতে আটক শিশুদের উদ্ধার করে তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী শিশু আলিফের মা এ্যানি খাতুন বলেন, বাড়িতে ঢুকে এতো ছোট্ট একটা শিশু আমার বাবুকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল আমি ভাবতেও পারছিনা। ছোট ছোট শিশুদের মাধ্যমে পাচারকারীরা এই কাজটি করতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে। আজকের এই ঘটনা যদি আমার বড় মেয়ে লামিয়া না দেখতো তাহলে ওরা তো আমার আলিফকে নিয়ে চলেই যেত।
স্কুল শিক্ষিকা ইসমেতয়ারা বলেন, আজকের ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে পাচারকারী চক্র এই ধরনের শিশুদের ব্যবহার করে। আটক শিশুদের জিজ্ঞাসা করলে এর পিছনে কারা আছে তা বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনতার হাত থেকে আটক শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশে খবর দিই। পুলিশ তাদেরকে স্বজনদের কাছে নিয়ে গেছেন বলে আমি জেনেছি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থানার এসআই বজলুর রহমান জানান, জনতার হাতে আটক তিন শিশু কংশারীপুর মহল্লার অস্থায়ী বেদে পল্লীতে বসবাস করে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ওই শিশুরা ১ বছরের শিশু আলিফকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। তবে এটি অপহরণ বলে আমার মনে হয়নি। তাই শিশু তিনটিকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বেদে পল্লীতে তাদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।