প্রদীপ কুমার দেবনাথ, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বুড়িশ্বর – শ্রীঘর – আশুরাইলের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানিতে সয়লাব চতুর্পাশ। যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু পানি আর পানি। ফসলি ক্ষেত, মাঠঘাট, রাস্তা, বাজার সবকিছু ডুবে গিয়ে একাকার হয়ে আছে। মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয়, বাড়িঘর সবকিছুতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ঘরের ভিতরে উঁচু মাচান। তার উপরে মানুষ, পশুপাখির বাসস্থান। পরিচিত স্থান, বাড়িঘর, স্কুল সবকিছু কেমন অপরিচিত মনে হয়।
এ অবস্থায় অসহায় মানুষগুলো সারাদিন বদ্ধ ঘরে খেয়ে না খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেই অসহায়দের জন্য রাতদিন ছুটে চলছেন একজন। তিনি ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা (সংরক্ষিত) সদস্য মোছা. হাবিবা বেগম। তিনি বুড়িশ্বর গ্রামের হাজী অহিদ মিয়ার মেয়ে ও আশুরাইলের হেফজু মিয়ার স্ত্রী। তিনি পানি বন্দি প্রত্যেকটি বাড়িতে যাচ্ছেন, অসহায়দের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত সাহায্য করে যাচ্ছেন।
এছাড়া তালিকা তৈরি করে নিজে ছুটছেন বিত্তবানদের নিকট এবং আহবান জানিয়েছেন আর্থিকভাবে সচ্ছলদের এই বানভাসিদের সাহায্য করতে। এলাকায় তিনি উত্তম ব্যবহার ও এলাকার সমস্যা নিরসনে ভূমিকা রাখায় বেশ জনপ্রিয়। করোনার ভয়াবহতার মাঝেও লকডাউনের সময় সর্বদা জনগণের সেবায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও জনগণের খোঁজখবর নিয়েছেন।
এলাকার জনসাধারণের মুখে মুখে হাবিবা বেগমের নাম। প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। তার কথা, “জনগণের কষ্ট দেখলে ঘরে বসে থাকতে পারিনা। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে রাতদিন চেষ্টা করি তারা ভালো থাকুক। বিনিময়ে কিছু চাওয়া নেই, শুধু দোয়া আর জনগণের ভালবাসা চাই।” এলাকার মানুষ বলছে এমন দুর্যোগে পানি ভেঙ্গে একজন নারী প্রতিনিধি যেভাবে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে জনগণ তাকে কখনও ভুলবে না।