দেশের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে এখনো ডুবে আছে। দেশের মোট ৩৩টি জেলায় বন্যা বিরাজ করছে। তবে কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও ক্ষেতে লাগানো সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র সবজির সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে সবজির দাম। এদিকে আলুর ওপর চাপ পড়ায় সেটিরও দাম বেড়েছে। তবে সরবরাহ ও উৎপাদন ভালো হওয়ায় কমেছে ইলিশ মাছের দাম। একই সঙ্গে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দামও কমেছে।
রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে এইসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ ও উৎপাদন ভালো হওয়ায় কমেছে ইলিশের দাম। নদীতে ও সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই সরবরাহ বেশি। আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় বর্তমানে অনেকটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ মাছ।
ব্রয়লার মুরগির দাম কমার কারণ ব্যাখ্যা করে ব্যবসায়ীরা জানায়, এখনও অনেকের বাড়ির ফ্রিজে কোরবানির মাংস সংরক্ষিত আছে। সাধারণ মানুষের কাছে মাংসের চাহিদা কিছুটা কমেছে। তাই দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মানভেদে চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, ঝিঙার কেজিও ৬০ টাকা।
লাউয়ের মৌসুম এখন নয়, তাই দাম কিছুটা বেশি জানিয়ে কোনাপাড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম জানিয়েছে, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চাল কুমড়ার (জালি) প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৪০ টাকা এবং পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বেড়ে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা দরে।
সবজির দাম বাড়ায় চাহিদা বেড়েছে ডিমের। এই সুযোগে ডিমের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাজার ভেদে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে এবং ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১০৫ টাকায়। কিন্তু বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা দরে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা দরে। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে। ৭৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। আর ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
বন্যায় কাঁচামরিচের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দাম চড়া। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। যার বেশিরভাগই ভারত থেকে আমদানিকৃত। এখন টমেটো ও গাজরের মৌসুম নয়। অনেকটাই কৃত্রিমভাবে এগুলোর আবাদ করেছেন চাষিরা। সেগুলোও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাই দাম বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। মানভেদে গাজরের কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা। করলা (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। বড় সাইজের করলা ৭০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে।