রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং) সিদ্দিক জুলফিকার আহমেদ।
রাত পৌনে ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিস থেকে ২৫টি মরদেহ উদ্ধারের খবর নিশ্চিত করেছেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং) সিদ্দিক জুলফিকার আহমেদ বলেন, ‘২২ তলা এ বিল্ডিংয়ের ফায়ার ফাইটিং করার জন্য নিজস্ব কোনো ক্যাপাসিটি নাই। বিল্ডিংগুলোতে যতক্ষণ নিজস্ব সক্ষমতা না থাকবে ততদিন এধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভেতরে তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে উদ্ধার কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে প্রতিটি ফ্লোরেই সার্চ করা হচ্ছে। ভেতরে কোনো হতাহত রয়েছে কি না। এখন পর্যন্ত ৬৮ জনকে এখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো হাসপাতালে পাঠানো করা হয়েছে। সংখ্যাটা বাড়তে পারে। ডিটেইলস সার্চিংয়ের জন্য আমাদের টিম কাজ করেছে।’
সিদ্দিক জুলফিকার আহমেদ বলেন, ‘৫-৭টি ফ্লোর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নয়-দশতলা থেকে শুরু করে উপরে দিকে ফ্লোরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।’
আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে একটুকু বলতে পারি, এ ধরনের বিল্ডিংয়ে সাধারণত ইলেক্ট্রিসিটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবন তৈরির সময় ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড না মেনে তৈরি করা হয়। যে কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। আমাদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আগুন লাগার কারণ, করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করব। এ ধরনের অবহেলা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। আর ছাড় দেওয়া যাবে না।
‘সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ অনেক ভলান্টিয়ার কাজ করছে। এসব ভলান্টিয়ারদের আমরাই ট্রেইনাপ করেছি। তারা কাজ করছে’।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) সাজ্জাদ হোসাইন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় যতগুলো কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবগুলো সার্চিং করা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজন ততক্ষণ চলবে। আমাদের ফায়ার কর্মীরা কাজ করবে।
নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ সাত জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- শ্রীলঙ্কার নাগরিক নিরস (৩০), পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমেনা ইয়াসমিন (৪০), মামুন (৩৬), আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৬৬) ও মনির (৫০)।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারের আট ও নয়তলায় আগুন লাগে। এতে ওই ভবনে আটকা পড়েন বহু মানুষ। ধারণা করে বলা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুন লাগে।
সূত্র : সময় নিউজ