দ্রুতই বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি। রাশিয়ার পতনের পর আমেরিকা বিশ্ব মোড়ল রূপে আবির্ভুত হয়েছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে দেশে দেশে আগ্রাসন চালিয়ে অস্ত্র বিক্রয় করেছে। মধ্য প্রাচ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রন করেছে।রাশিয়ার সাম্রাজ্যতন্ত্র পতনেও আমেরিকার ইন্দন ছিল এমন কথাও প্রচারনায় ছিল। সি আই এ বহুদেশে কর্তৃত্ব করতে বিশ্ব নেতাদের হত্যা করেছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ন্ত্রনে রেখে ইসরাইলকে নি:শর্ত সমর্থন দিয়েছে। অস্ত্র দিয়ে শক্তিধর করে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস চালিয়েছে। ভয় দেখিয়ে সৌদিআরবকে ভীতু করে রেখেছে। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দুর্বল করেছে ইরানকে। ইরাক- ইরান যুদ্ধ বাঁধিয়ে ইরাকের তেল নিয়ন্ত্রন করেছে। সেই ইরাককে কুয়েত দখলের সবুজ সঙ্গেত দিয়ে দখল নিয়েছে দুই দেশেই। সাদ্দামকে হত্যা করে ধ্বংস করে দিয়েছে ইরাককে। পুতুল সরকার বসিয়ে ইরাকে আজ্ঞাবাহ করে রেখেছে।
✪ আরও পড়ুন:বি এন পি
কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পালটাতে শুরু করেছে। ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে সৌদিআরব। রাশিয়া-চীন দক্ষিন পূর্বএশিয়ার রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। সৌদিআরব আমেরিকার খবরদারি মানছে না। ন্যাটোর সদস্য হয়েও তুরষ্ক মার্কিন কূটনীতির বিরোধীতা করছে। ব্রিক্সের সদস্য হতে চলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানে ইমরান সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশটাকেই অচল করে দিয়েছে। ন্যাটো জোটভুক্ত অনেক দেশেই এখন মার্কিন প্রশাসনের সমালোচনা করছে। ভারতের মোদি সরকার প্রথম দিকে কিছুটা নমনীয় হলেও রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল করে দিয়েছে। মায়ানমারে চীন নিয়ন্ত্রন রেখেছে আগে থেকেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ঐ অঞ্চলে আমেরিকান বিরোধী মনোভাব কাটেনি। দক্ষিন চায়না সাগরে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ মহড়া করার অনুমতি দিয়েছে সিঙ্গাপুর।
✪ আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন
এখন বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপটি চায় আমেরিকা। সেন্টমার্টিনে নৌবহর আনতে পারলে এখান থেকেই হুমকি দিবে চীনকে। বিনিময়ে বাংলাদেশেকে সামরিক অস্ত্র বিক্রি করে যুদ্ধাং অবস্থা সৃষ্টি করে রাখবে। সামরিক খাতে ব্যয় বাড়িয়ে উন্নয়নকে থামিয়ে দিবে বাংলাদেশের। ভারত চায় না বাংলাদেশে চীন কর্তৃত্ব করুক। আবার চীন এই অঞ্চলে মার্কিনিদের উপস্থিতি মানবে না। বাংলাদেশ ব্রিক্সের সদস্য হলে অর্থনৈতিক ভাবে বাজার হারাবে আমেরিকা। এই সমীকরনে শেখ হাসিনা এখন দক্ষিনপুর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে গুরত্বপুর্ন হয়ে উঠেছেন। সাহসী বক্তব্য দিচ্ছেন কাউকে তোয়াক্কা না করে। এই রাজনীতিটি সহজ নয়। সামান্য ভুল হলে চরম মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশকে।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতিতে সময় একটা বড় ফ্যাক্টর
তিন পরাশক্তি মাঠে নেমেছে দক্ষিনপূর্ব এশিয়ায়। সৌদিআরবও এখন চীন রাশিয়ার দলে। ইরান আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। দক্ষিন কোরিয়া হুমকি ধমকি দিচ্ছে বহুদিন ধরেই। বিশ্ব রাজনীতি এখন টলমাটাল। এই রাজনীতিতে দুটি বিষয় নিশ্চিত হবে (১) আমেরিকা এশিয়া থেকে কর্তৃত্ব হারাবে না হয় (২) আমেরিকা আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রেখে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে বাইডেন প্রশাসনের সেই সক্ষমতা আছে মনে হয় না। তাই বিশ্ব রাজনীতির এই খেলাটি কঠিন হয়ে গেছে। সামান্য ভুল হলে বিপদ ডেকে আনতে পারে বাংলাদেশে। সঙ্গতভাবেই বাংলাদেশের সকল নেতৃত্বকে বিশ্ব রাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে বক্তব্য দেওয়া উচিৎ হবে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি