ডিবিএন ডেস্কঃ বাংলাদেশে এপ্রিল-জুন ও অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাত সাধারণত বেশী হয়ে থাকে। বর্ষা শুরুর আগে আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে প্রতিদিনই প্রাণহানি ঘটছে। বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করলেও আমরা সবাই সাধারণত জানি না যে বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত, আর কী উচিত নয়। আর তাই এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বজ্রপাতের সময় পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিতে এবং উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। এ সময় জানালা থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলা, টিভি-ফ্রিজ না ধরা, গাড়ির ভেতর অবস্থান না করা এবং খালি পায়ে না থাকারও পরামর্শ তাদের।
আসুন জেনে নিই আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘোষিত বজ্রপাতের সময় করনীয় ও বর্জনীয় বিষয়সমূহঃ
- ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনও দালানের নিচে আশ্রয় নেওয়া যায়।
- বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পর্শের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বজ্রঝড়ের সময় গাছ বা খুঁটির কাছাকাছি থাকা নিরাপদ নয়। ফাঁকা জায়গায় যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অত্যন্ত বেশি।
- বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছে গিয়ে উঁকিঝুঁকি নিরাপদ নাও হতে পারে। এ সময় জানালা বন্ধ রেখে ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
- বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা ঠিক হবে না। এমনকি ল্যান্ড ফোন ব্যবহার না করতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শ এসে অনেকে স্পৃষ্ট হন।
- বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব ধরনের যন্ত্রপাতি এড়িয়ে চলা উচিত। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও স্পর্শ করা ঠিক হবে না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই প্লাগ খুলে রাখা ভালো।
- বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করতে বলেছেন আবহাওয়াবিদরা। যদি তখন প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়, তাহলে গাড়ি কোনও গাড়িবারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে রাখা যেতে পারে। ওই সময় গাড়ির কাচে হাত দেওয়াও বিপজ্জনক হতে পারে।
- বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমতে পারে। অনেক সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সেই পানিতে পড়ে হতে পারে দুর্ঘটনার কারণ। কাছে কোথাও বাজ পড়লেও সেই পানি হয়ে উঠতে পারে বিদ্যুতস্পৃষ্টের কারণ।
- বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বের হতেই হয়, পা ঢাকা জুতো ব্যবহার করা ভালো। রাবারের গামবুট এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে।
- বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলেও খেয়াল রাখতে হবে। কেউ আহত হয়ে থাকলে দেরি না করে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করতে হবে। তবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কাউকে ঘটনার সময় খালি হাতে স্পর্শ করলে নিজেও ঝুঁকিতে পড়তে হবে।