প্রাণঘাতী করোনার তান্ডবে নাজেহাল গোটা বিশ্বের এখন একটাই নজর, কবে আসতে চলেছে মারণ ভাইরাসের ভ্যাকসিন। তবে সেই ভরসায় একটু হলেও স্বস্তি দিতে একধাপ এগিয়েই মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও ওষুধ প্রস্তুতকারীরা জানিয়েছে, আগামী গ্রীষ্মের শেষেই করোনার ভ্য়াকসিন উত্পাদন শুরু হয়ে যাবে। একদিন আগে এই তথ্য সামনে আনেন মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
আমেরিকায় মানুষের ওপর প্রয়োগ করা প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের ফল আশানুরূপ ভাবেই আসছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের প্রভাব যা দেখা গিয়েছে, তাতে মানব শরীরে এর ফলে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব হয়নি। ওই ভ্যাকসিনের ফলে মানব শরীর প্রত্যাশা মতোই সাড়া দিচ্ছে বলে নির্মাতা সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যেই উত্পাদনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিষেধকের উত্পাদনের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহে সংস্থাগুলিকে সাহায্য করা হচ্ছে। তবে কবে ভ্যাকিসনের উপাদানের উত্পাদন ও প্রস্তুতির কাজ শুরু হবে তা জানা যায়নি। গোটা পদ্ধতিটা শেষ হতে গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত গড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে আরও জাননো হয়েছে, ২০২১ সালের প্রথম দিকেই কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের ৩০কোটি ডোজ সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে ট্রাম্প সরকার।
যুক্তরাষটরের তরফে রিজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যাল নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে কোভিড-১৯ থেরাপি আবিষ্কারের জন্য ৪৫ কোটি ডলারের চুক্তি করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই পরীক্ষামূলক প্রযোগের ফল সামনে আসবে। দ্রুত গতিতে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে বলে জানানো হয়েছে মন্ত্রক থেকে। শুধু তাই নয় ১০০কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থসাহায্যে পুষ্ট কোম্পানিগুলির মধ্যে রয়েছে মর্ডানা (Moderna) ও জনসন অ্যান্ড জনসন (Johnson & Johnson)-এর মতো নামী সংস্থাগুলি। এমাসের শেষেই হিউম্যান ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ্যে আসবে। আর এটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে এত কম সময়ের মধ্যে করোনার মতো অতিমারীর মোকাবিলায় ভ্যাকসিন তৈরির রেকর্ড গড়বে আমেরিকা। এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হবে, সে ব্যাপারে তাঁদের মধ্য়েই সন্দেহ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে আমেরিকার আট জন বাসিন্দার ওপর ওই ওষুধের দুটি করে ডোজ প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে এদের শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তা পরীক্ষাগারে মানব কোষের ওপর পরীক্ষা করা হয়। দেখা গিয়েছে এই সব মানব কোষে করোনাভাইরাস নতুন করে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এরপর, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬০০ জনের ওপরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। জুলাইয়ে হবে তৃতীয় পর্যায়ে ১০০০ জনের ওপরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরীক্ষামূলক কাজ। সেই সময়ই বলা হয়েছিল, এই পরীক্ষা সফল হলেই আগামী বছরের শুরুতে বাজারে চলে আসতে পারে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন।
অন্যদিকে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ উত্পাদন প্রক্রিয়াও চালিয়ে যাচ্ছে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মজে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশগুলি। তবে এসবের মধ্যেও আশংকার বার্তা দিয়ে রেখেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্করের ক্ষেত্রে অনন্তত এক বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পরে বলে জানিয়েছিল হু। সুত্রঃ এই সময়।