স্বাধীনতার মাসে জাতির জনকের ভাস্কর্যে আক্রমণ করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। ভাস্কর্য বাংলাদেশে রয়েছে বহু। প্রাচীন নিদর্শনেও ভাস্কর্য প্রদর্শিত হচ্ছে হাজার বছর ধরে। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে হুজুরদের এত উত্তেজনা কেন? ধর্মে নিষিদ্ধ হলে তা নিয়ে হাদিসের ব্যাখ্যা দেওয়া যেত। উগ্রতা দেখানোর কারণ কি? ভাস্কর্য যদি বেদাত হয় তাহলে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হয়নি কেন? ইসলাম ধর্মের প্রচার শুরু হয়েছে সৌদিআরব থেকে, সেখানেও ভাস্কর্য বিদ্যমান। বাংলাদেশের মোসলমানেরা কি তাদের সৌদিআরবের চেয়েও বেশী মোসলমান? ভাস্কর্য নিয়ে অন্য কোন মুসলিম দেশে উগ্রতা দেখা যায়নি কেন? আসলে বিষয়টি ধর্মীয় নয় রাজনৈতিক। এই রাজনীতির জন্ম হয়েছে পাকিস্তান আমলে। পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবকে মেনে নিতে পারেনি। বার বার হত্যা করার চেষ্টা করেছে- পারেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে বাঙালীরাই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যাই করেনি তার অর্জনকেও ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে। মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করেছে ধর্মকে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে ইতিহাস পূনরুদ্ধার করেছেন। জাতির জনকের স্বপ্নপূরণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। দেশকে বদলে দিয়েছেন। বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। এখন বিদেশীরাই বলে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। প্রতিবেশী ভারত আর পাকিস্তানও ঈর্ষান্বিত হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। দেশীয় শত্রু আর স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির তাদের ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে রাজনীতি শুরু করেছে ধর্মের নামে। তাদেরকে সহযোগিতা করেছে ৭৫ এর বেনিফিশিয়ারী বি এন পি। ক্ষমতার স্বার্থে বি এন পি এই অপশক্তিকে লালন করেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে নিঃস্ব বি এন পি এখনো সেই সঙ্গটি ছাড়তে পারেনি। নতুন বিতর্ক তুলেছে শেখ হাসিনার সাফল্যকে থামিয়ে দিতে চায়। ভাস্কর্য যদি বেদাত হয় তাহলে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্যটিও ভেঙ্গে ফেলা জরুরী ছিল। জিয়ার ভাস্কর্যত চট্রগ্রামেই এবং তাদের হাতের নাগালে। শুধু কি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যই বেদাত মনে হল হেফাজতের?
৩০ লক্ষ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙ্গে উগ্রবাদীরা তাদের অস্ত্বিত্ত্বের জানান দিয়েছে। রাজনীতিটিও খোলাসা হয়ে গেছে। এটাকে দুর্ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে দেশবাসীকে এখনই জাগ্রত হতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে না হয় দেরী হয়ে যাবে। এই অপশক্তি সব সীমা অতিক্রম করে গেছে। বাঙালী জাগ্রত হলে কি করতে পারে ৭১ই প্রমাণ দিয়েছে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
৫ ডিসেমবর ২০২০।