সাবিক ওমর সবুজ, বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়া শাজাহানপুরে বুধবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে হাতাহাতি উপজেলা প্রাঙ্গণে হয়।এ সময় এমপি উপজেলা চেয়ারম্যানকে পিস্তুল প্রদর্শন করেছেন। সংঘর্ষের বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং এমপি আলাদা ভাবে বর্ণনা করেছেন।
জানা যায়, শাজাহানপুর উপজেলায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা সমাবেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আমন্ত্রণে উপজেলা পরিষদে এমপি রেজাউল করিম বাবলু-সহ এমপির প্রতিনিধিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি তে নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষের সামনে দাড়ালে, উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বাদশা আলমগীর ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীর সাথে এমপি এবং এমপির সহকারীর সাথে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ধাক্কাধাক্কি হলে এমপির সহকারী আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গুরুতর আহত হন।এ সময় এমপি তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল বের করেন।ঘটনাটি তাৎক্ষনিক জানাজানি হলে পুলিশ এসে এমপি এবং তার পিএসকে উদ্ধার করে। পিএসকে হাসপাতালে ভর্তির পর এমপিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
এমপি রেজাউল করিম বাবলু বলেন,আইনশৃঙ্খলা সমাবেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ইনভিটেশনে উপজেলা পরিষদে আমি আমার প্রতিনিধিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি তে নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষের সামনে দাড়ালে, বাদশা আলমগীর আমার লোকজনকে মারপিট শুরু করে, আমার পিএসকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করেছে। কি বা কেন করেছে আমার জানা নাই। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমার সাথে খারাপ আচারন করেছে। রেজাউল করিম বাবলু আরো বলেন আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স কৃত পিস্তল বের করেছি মাত্র।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এমপি কি কারনে বা কেন উপজেলায় এসেছে আমাদের জানা ছিলো না,বাইরে উচ্চস্বরে আওয়াজ শুনে বেরিয়ে আসি,এমপি সাহেবকে বসে কথা বলার কথা বললে, এমপি সাহেব তার ব্যক্তিগত পিস্তল উঁঠিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর শ্যালক ও তার (ব্যক্তিগত সহকারি) পিএস রেজা বিভিন্ন প্রকল্প দেয়ার কথা বলে যুবলীগ নেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।টাকা দিয়ে প্রকল্প না দেয়া ও দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় কথার কাটাকাটি হয়। এমপির এমন আচারনে উপজেলা চেয়ারম্যান লজ্জিত হয়েছেন বলে জানান।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুকে পিস্তল দিয়ে হুমকির প্রতিবাদে সকাল ১১.৩০ মিনিটে বিক্ষোভ করেন উপজেলা যুবলীগ।বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, অচিরেই এমপিকে গ্রেফতার করে আইনি আওতায় আনতে হবে, নতুবা কঠোর আন্দোলন করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও বিরোধী জোটের সকল প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় বিরোধী জোটের আকুন্ঠ সমর্থন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন রেজাউল করিম বাবলু। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে উৎকোচ নিতে শুরু করেন স্থানীয় সাংসদ রেজাউল করিম বাবলু। উৎকোচ নিয়েও পরবর্তীতে প্রকল্পের কাজ পাইয়ে না দেয়ার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছিলো স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা মাঝে। তারই রেশ ধরে আজকে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একাধিক সরকার দলীয় নেতাকর্মী।