সারা দেশে বই উৎসবে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাসিত হলেও বগুড়ার শেরপুরে দোয়াল সাড়া মধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পায়নি বই। ৭২০ টাকা স্কুলে না দেওয়ায় বই উৎসব থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের উপর। কমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি বছরের শুরুতেই অন্যদের মত তারাও বই চায়, নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে চায়। কিন্তু শিক্ষকেরা টাকার জন্য বই দিলেন না।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গন ছেড়ে বাহিরে ঘোরাফিরা ও মাঠে খেলাধুলা করছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সারা দেশে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শ মোতাবেক বছরের ১ম দিনেই সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও দোয়াল সাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় বই উৎসব থেকে শিক্ষার্থীরা বই উৎসব থেকে বঞ্চিত। নতুন বই পেতে হলে সেশন ফি ৫শ টাকা, বিদ্যালয় উন্নয়ন ফি ১শ টাকা, স্কাউট ফি ৫০ টাকা, ক্রীড়া উন্নয়ন ফি ৫০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল ২০টাকা (প্রতি মাসে) মোট ৭২০ টাকা পরিষোধ করতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। টাকা না দিলে শিক্ষার্থীদের নতুন বই দিতে নিষেধ করেছেন প্রধান শিক্ষক সুবাস চন্দ্র মাহাতো।
এই বিষয়ে বই না পাওয়া ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানায়, বছরের প্রথম দিন দুটি মাত্র বই পেয়েছি। স্কুলে এসে জানতে পারি ৭২০ টাকা না দিলে নতুন বই দেওয়া হচ্ছে না। তাই দু‘টি বই নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়েছে। আমরা জানি সরকার থেকে প্রথম দিনেই সব বই আমাদের দেওয়ার কথা। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমাদের সম্পূর্ণ বই দেয়নি এবং কøাসও নিচ্ছে না। তাই আমরা মাঠে ও বাহিরে ঘোরাফেরা করছি।
অভিভাবক আ: সালাম জানান, আমার মেয়ে ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সরকার থেকে বই পাওয়ার কথা থাকলেও টাকার জন্য আমার মেয়ে বই পায়নি। তাই স্কুলে এসেছি বিষয়টা জানার জন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকেরা জানান, টাকার অভাবে মেয়েকে শহরে পাড়াতে পারি না তাই গ্রামের স্কুলে ভর্তি করে দেই। কিন্তু এখন মেয়ে বলছে টাকা ছাড়া স্কুলে বই দিচ্ছেনা। আমি গরিব মানুষ ৭২০ টাকা দেব কোথায় থেকে?
এ বিষয়ে বছরের প্রথম দিন সরকারি নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের বই না দেওয়া সম্পর্কে জনতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুবাস চন্দ্র মাহাতো জানান, সেশন ফি, বিদ্যালয় উন্নয়ন ফি, স্কাউট ফি, ক্রীড়া উন্নয়ন ফি, বিদ্যুৎ বিল সহমোট ৭২০ টাকা না দেওয়ায় বই দেইনি। তবে বুধবার ৩ জানুয়ারী স্ব স্ব শ্রেণীর শিক্ষকের কাছে টাকা জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ন বই দেওয়া হবে না।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে আমার জানা নেই। যদি বই না দিয়ে থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যপারে জেলা শিক্ষা অফিসার হযরত আলী জানান, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার কথা। যদি বই না দেয় তাহলে এটা অন্যয় হয়েছে। তদন্ত করে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:২৪ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি