দশ বছর কম সময় নয়। এখন যারা ফেসবুকে আছেন তাদের অনেকেই দশ বছর আগেও ছিলেন এই জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইটে। সবাই এখন ফেসবুকে ১০ বছরের চ্যালেঞ্জ খেলছেন। মজাও হচ্ছে। কত লাইক, কত শেয়ার, কত কমেন্ট! যাদের সেই সময়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছিল না, তারাও পুরনো ছবি জোগাড় করে চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন। আগে কেমন দেখতে ছিলেন, আর দশ বছর পরে এখন কেমন! কী ছিলেন আর কী হলেন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এখন মহা উৎসব।
ফেসবুকে ‘ফেস রিকগনিশন’ ফিচারটি আরো উন্নত করতে এই ‘১০ বছরের চ্যালেঞ্জ খেলা’য় ব্যবহৃত ছবিগুলো বেশ সাহায্যও করছে। এমনিতেই বিশেষ এই ফিচারটি নিয়ে এরই মধ্যে কথা উঠেছে। ধরুন, আপনি কোন সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তখনকার মিটিং-মিছিলের ছবিগুলোয় আপনার উপস্থিতির প্রমাণ আছে। এখন যদি অন্য কেউ তেমন কোনো ছবি ফেসবুকে আপলোড করে তাহলে ‘ফেস রিকগনিশন’এর মাধ্যমে তা আপনাকে চিহ্নিত করে ফেলবে। তেমনি ‘১০ বছরের চ্যালেঞ্জ খেলা’য় ব্যবহৃত ছবিগুলো আপনার সম্পর্কে ফেসবুককে অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করছে।
আপনার এসব ছবি পোস্টের সঙ্গে অন্যের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে সতর্ক করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনেও এ তথ্য জানানো হয়। সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনের প্রতিবাদে বুধবার (১৬ জানুয়ারি) ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ওই ট্রেন্ডের সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা না থাকার ঘোষণা দেয়। তারা জানিয়েছে, ফেসবুক এই ট্রেন্ড শুরু করেনি। ফেসবুকে থাকা ছবি নিয়ে অনেকেই এ মিম তৈরি করছেন। এ মিম থেকে ফেসবুক কিছুই পাবে না। ফেশিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহারকারী চাইলে যে কোনো সময় চালু বা বন্ধ করতে পারেন।
কিন্তু কে শুরু করল এই চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই ফেসবুকের পক্ষে টুইট করে জানানো হয়েছে, এর পেছনে তাদের কোনও হাত নেই। তবে শুরুটা ফেসবুকেই হয়েছে। এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি প্রথম কে ২০০৯ আর ২০১৯-এর ছবি পাশাপাশি এনে পোস্ট করেছেন। আর এটা ঠিক যে, এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে ইউজারদের এনগেজমেন্ট বেড়ে যাওয়ায় আপাতত জমে গেছে ফেসবুকের ব্যবসা।
ফেসবুকের প্রাইভেসি ও তথ্য কেলেঙ্কারি ঘিরে সম্প্রতি বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাই ১০ ইয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
আমাদেরকেও ইন্টারনেটে নিজেদের তথ্য শেয়ারের ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। অধিকাংশ সময়ই কোনো হ্যাকার নয়, আমরাই নিজেদের ভুলে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিচ্ছি বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওর্য়াক কোম্পানির হাতে।