প্রদীপ কুমার দেবনাথ, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)।। বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাবে মানুষ প্রায় গৃহবন্দী। উন্নত , উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত সকল দেশেই পুরোপুরি লকডাউন চলছে। ইতিমধ্যে ২০৫ টি দেশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
বিশ্বের মহামারী আক্রান্ত দেশের প্রাথমিক অবস্থার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা ভয়াবহ। করোনায় আক্রান্তের পূর্বেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, প্রশাসনের প্রশংসনীয় তৎপরতা, জনসচেতনতা এসবের কারণে শুরুতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বিদেশফেরত ও গ্রামের অসচেতন জনগনের কারণে বাংলাদেশে ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হতে যাচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকার জনসাধারণ কোনমতেই মানছে না সরকারি আদেশ।
গ্রামের বাজার, রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকান, এক বাড়ির লোকজনের অন্য বাড়িতে যাতায়াত হরদম চলছেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক বাজারের দৃশ্যও তাই। সারাদিনই প্রায় সবধরনের দোকানপাট খোলা থাকে। শাটার গুলো অর্ধখোলা বা কোথাও শাটার বন্ধ করে পিছনের দরজা খোলা থাকে। প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতি টের পেলে শাটার নামিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে দূরে অবস্থান করে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। কারও আবার দোকান ও বাসা একটাই। তারা বাসাবাড়ির অজুহাতে দোকান খোলা রাখে। এভাবে লুকোচুরি খেলার মতো অতিলোভী ব্যবসায়ীরা গণজমায়েত অব্যাহত রাখতে সাহায্য করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক বলেন, আমাদের গ্রামের বাজার বা রাস্তায় গেলে বুঝার উপায় নেই যে দেশে করোনা নামক কোন রোগ আছে। বড় দুশ্চিন্তায় আছি ভবিষ্যৎ নিয়ে।
মুঠোফোনে বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য, ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব ফারুকুজ্জামান ফারুক সাহেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছি। নিজ উদ্যোগে এলাকার চায়ের স্টল বন্ধ, কনফেকশনারী বন্ধ, কাপড়, মোবাইলের দোকান এসব বন্ধ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দুরত্ব বজায় রাখার জন্য সচেতনতা তৈরি করছি। মাঠে-ময়দানে খেলাধুলা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি, মাননীয় এমপি মহোদয়ের ঘোষণা অনুযায়ী গ্রামের প্রবেশপথ গুলো বন্ধ করে দিয়েছি।
ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট এ কে এম কামরুজ্জামান মামুন সাহেবের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যেই সরকারি আইনের প্রতি গ্রামবাসীকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। জীবন রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ক্রয়ের তাগিদ দিচ্ছি।
আমার ইউনিয়ন পরিষদ বাজারে ঘোষণা দিয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের পর একটি দোকানও খোলা থাকলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অসহায়দের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছি। তাছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একটি অস্থায়ী মনিটরিং সেল গঠন করেছি যারা জনসমাগম, দোকানপাট খোলা কিনা, রাস্তা বা অন্য স্থানে অবাধে কেউ ঘুরাঘুরি করছে কিনা এসব মনিটরিং করবে। আমি নিজেও সবসময় অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।’