অনেকেই প্রশ্ন করেন, প্রবাসে বসে দেশের রাজনীতি করি কেন? কেউ কেউ ঠাট্টা বিদ্রুপও করেন। পরামর্শ দেন মূল ধারার রাজনীতি করতে। প্রথম প্রথম তাদের কথায় লজ্জা পেতাম ভাবতাম, আসলেইত আমরা বিদেশে বসে দেশের রাজনীতি করছি কেন? কিন্তু এখন দেখছি যারা আমাদেরকে রাজনীতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা নিজেরাই রাজনীতি করেন। তারা দেশের বিরুদ্ধে রাজনীতি করেন। বাংলাদেশকে বিদেশের কাছে হেয় করে এমন সব অপপ্রচারনা করেন যেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম জঘন্য অপরাধের দেশ।
এই লোকদের চোখে মুক্তিযুদ্ধ একটা গন্ডগোল মাত্র। আওয়ামী লীগের নাম শুনলেই তাদের মাথায় রক্ত চড়ে যায়। অথচ দেশটা স্বাধীন হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞিতায় আবিস্কার করেছি এরা আসলে সুবিধাবাদি না হয় স্বাধিনতা বিরোধী। অন্য কোন দলের কথায় তাদের উত্তেজনা হয়না। এখন এই লোকদেই অনেকে দাবী করেন তারাও আওয়ামী লীগ করেন। কৌশলে দলে ভিরতে চান। স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারেনা কিন্তু, প্রবাসে তারা নিয়মিত দল পরিচালনা করে। প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়াতে দেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাশাপাশি ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায়। ভারত বিদ্বেষি বক্তব্য দিয়ে মানূষকে বিভ্রান্ত করে। ষড়যন্ত্র করে সরকারের বিরুদ্ধে।
এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা যারা প্রবাসে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, তারা প্রতিবাদ করছি। সরকার গঠনের পর দেশে দলের কর্মী বাহিনীর কোন কাজ নেই। তারা সুবিধার লোভে দলের সুনাম বিনষ্ট করে কেউ কেউ। প্রবাসে দলের কর্মীরা দুষ্টচক্রের মোকাবেলা করে। প্রবাসে দলের পদ পদবী নিয়ে অসন্তোষ হয়। এমনটি দেশেও হয় কিন্তু প্রবাসী কর্মীরা নিস্বার্থভাবে নিজের পয়সা খরচ করে দলের জন্য কাজ করে।
কানাডায় প্রতিটি সংগঠন (আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং প্রাদেশিক কমিটিগুলি) এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার। বঙ্গবন্ধুর খুনী নূর চৌধুরীকে বহিষ্কারের জন্য কানাডা সরকারের সংগে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে দলের প্রতিটি নেতা-কর্মী। সংজ্ঞবদ্ধ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে কর্মীরা। প্রবাসে যেভাবে কর্মীবাহিনী নিবেদিত হয়ে দলের জন্য কাজ করছে তা দেশের কর্মীবাহিনীও করতে পারবেনা। এমনটি না করলে এতদিনে বিদেশের কাছে বাংলাদেশের চিত্রটি ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হত।
শুধু কানাডায় নয়, বিশ্বের সব দেশে যেখানে বাঙ্গালী আবাসন গড়েছে সেখানেই দলের কার্যক্রম চলছে। সবখানেই স্বাধীনতার শত্রুরা ঐক্যব্ধ হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষরযন্ত্র করে চলেছে। যারা প্রবাসের রাজনীতিকে নিন্দার চোখে দেখেন তারা, উদ্দেশ্যমুলক ভাবেই তা করেন।
দেড় কোটি বাঙ্গালী এখন বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠি রেমিটেন্স উৎপাদন করা ছাড়াও দেশের সচেতন নাগরিক। তাদেরও রাজনৈতিক মতামত দেওয়ার অধিকার আছে। দেশের জন্য ভাবনা করার অধিকার আছে। সেই কারনেই প্রবাসে বাংলাদেশের রাজনীতি করা দোষের নয় বরং জরুরী।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
বিশিষ্ট সমাজসেবক, কলামিস্ট, টরন্টো, কানাডা।