মৌলভীবাজারের বড়লেখায় টাকায় বরকত বাড়ানোর ‘ফু’ দেওয়ার নামে কাতার প্রবাসীর স্ত্রীর ৭৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বড়লেখা পৌরশহরে অভিনব কৌশলে প্রতারণার এ ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাবিয়া বেগম ওই দিন বিকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি মঙ্গলবার (২৬সেপ্টেম্বর) জানাজানি হয়।
ছাবিয়া বেগম উপজেলার সুজানগর ইউপির বড়থল গ্রামের কাতার প্রবাসী ছুয়াব আলীর স্ত্রী বলে জানা যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ছাবিয়া বেগম রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ব্যাংক থেকে স্বামীর পাঠানো ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ব্যাংক থেকে নেমে রাস্তায় আসলে ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি হঠাৎ ছাবিয়া বেগমের মাথা ও মুখে হাত বুলিয়ে বলেন, আমি নামাজ পড়তে আসি। তখন তিনি ওই ব্যক্তির পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেলে এক যুবক তার পথ আগলে বলেন- ওই বাবা কি বলেছেন? উনি অনেক বড় পীর, উনার কথা শুনলেন না কেন। পথ আগলে ওই যুবক ছাবিয়া বেগমকে কথিত পীরের কাছে নিয়ে যান।
এ সময় ছাবিয়া বেগম দেখতে পান ৫০-৫৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি মধ্যবয়স্ক আরও এক ব্যক্তির টাকা হাতে নিয়ে ‘ফু’ দিয়ে ফেরত দিচ্ছেন। তখন ছাবিয়াকে কথিত পীর বলেন, তোমার কাছে টাকা আছে। টাকাগুলো দেও। টাকা পড়ে (ফু) দিই। টাকার বরকত হবে। তখন তিনি ব্যাংক থেকে তুলে ব্যাগে রাখা ১ হাজার টাকার ২৩টি নোট ও ৫০০ টাকার ১০০টি নোটে ৭৩ হাজার টাকা ওই ব্যক্তির হাতে দেন। দুই হাজার টাকার ছোট নোট হওয়ায় সে ওগুলো নেয়নি। মুহূর্তেই ওই ব্যক্তি টাকাগুলো হাতিয়ে ছাবিয়ার ভ্যানিটি ব্যাগে দিয়েছেন বলে পেছন দিকে না তাকিয়ে দ্রুত চলে যেতে বলে। সামান্য এগিয়ে যাওয়ার পর ছাবিয়া বেগম দেখতে পান তার ভ্যানিটি ব্যাগে কোন টাকা নেই।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা ছাবিয়া বেগমের পাশে হলুদ টিশার্ট পরা মূল প্রতারকের সহযোগী এক যুবক দাঁড়িয়ে আছে। ডানপাশে পাঞ্জাবি পরা মূল প্রতারক টাকায় বরকত বাড়ানোর ‘ফু’ দিতে ওই নারীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
ভুক্তভোগী ছাবিয়া বেগমের ছেলে আব্দুল আজিজ মঙ্গলবার রাতে যোগাযোগ করলে জানান, আমার আম্মা ব্যাংক থেকে আব্বার পাঠানো ৭৫ হাজার টাকা তুলে নিচে নামতেই প্রতারকরা উনার কাছ থেকে ৭৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অবশিষ্ট ২ হাজার টাকা ছোট নোট হওয়ায় সেগুলোতে ‘ফু’ লাগবে না বলে নেয়নি। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঐদিনেই থানায় গিয়ে আম্মা জবানবন্দি দিয়েছেন।
বড়লেখা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পরই পুলিশ ঘটনাটি তদন্তে নেমেছে। প্রতারক চক্রকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতারকদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
*** আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৩৩ | বৃহস্পতিবার ***
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি