তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ একটি ছবিতে আপত্তিকর মন্তব্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও বহাল তবিয়তেই আছেন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে উক্ত ঘটনায় আলোচিত আবু জার মো. বাবলা নামে এক ব্যাক্তি। এতে প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ আওয়ামী পরিবার থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা ,যুবলীগ ,স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং ছাত্রলীগের হাজার হাজার কর্মী। দলের প্রধান এবং দেশের একাধিকবারের সফল প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অপমানজনক মন্তব্য মেনে নিতে পারেনি কেউ।
এদিকে এমন বড় একটি ঘটনা ঘটানোর পরও তাকে আটক না করে বরং প্রশাসনের নীরবতা অবাক করেছে আওয়ামী পরিবারের লোকজনদের । কেউ কেউ বলছেন বিরোধী দলের সাথে সম্পৃক্ত থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে এমন নোংরা প্রচার করার সাহস যদি এখনই দেখাতে পারে তাহলে ভবিষ্যতে তাদের সমর্থিত রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলে তারা কি করবে এমন প্রশ্নও রেখেছেন অনেকেই ।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গত (১৬ মার্চ) মার্চ রোববার বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ছবি ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য দিয়ে পোস্ট ‘করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন । এতে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী সহ স্থানীয় সুশীল সমাজ ক্ষিপ্ত হন। আপত্তিকর’ মন্তব্য যুক্ত করে পোস্ট করার অপরাধে শ্রীমঙ্গল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ ফেসবুকে তার নিজস্ব টাইমলাইনে ঘোষণা দিয়ে এমন রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের জন্য তাকে তাৎক্ষণিক সংগঠনের সহ-সভাপতির পদ থেকে বহিস্কার করেন। বহিস্কৃত এই ব্যাক্তির নাম আবু জার মো. বাবলা । তিনি একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন পাশাপাশি একটি পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের কয়েকদিন আগে তিনি পরিকল্পিতভাবে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি যৌথ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করেন আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মী।
গত (১৬ মার্চ) রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবুজার বাবলা তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবিটি পোস্ট করেন। ছবিটির সঙ্গে তিনি একটি মন্তব্য জুড়ে দেন, যে মন্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই। আবুজার বাবলার টাইমলাইনের এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী পরিবার ছাড়াও সচেতন মহলে এ নিয়ে সমালোচনার ব্যাপক ঝড় ওঠে ।
এদিকে দুই দেশের দুই প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবু জার বাবলার এমন জঘন্য কটূক্তির জন্য তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির জোর দাবী জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এ এফ এম হিমেল ,কদর আলী,কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ সুজাত।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বলেন,আবু জার বাবলা নামের এ ব্যাক্তি আমাদের বাতিঘর, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে কটূক্তি করে পোস্ট করার পরও প্রশাসন কেন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা আওয়ামী পরিবার অন্তরে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছি ।
রাজু বলেন তার খুঁটির জোর কোথায় ?তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে এমন নিন্দনীয় কাজের সঠিক বিচার করা হোক।যাতে করে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এমন জঘন্য কাজ করার সাহস না পায় ।
এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এ এফ এম হিমেল তার এহেন কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান।
হিমেল বলেন, ঠিক যে মুহূর্তে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তার ঠিক কয়েকদিন আগে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে দেশে একটি অরাজগতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দুই দেশের দুই প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রীর যৌথ একটি ছবি কটূক্তি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায়না। এর তীব্র নিন্দা জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা।
স্থানীয় রাজনীতিবিদদের কয়েকজন বলেন, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঘিরেই এ ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আবুজার বাবলার ফেসবুক পোস্ট তারই অংশ।
শ্রীমঙ্গল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়টি নিয়ে ঘোষণা দেন।
তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেন , আবুজার বাবলার ফেসবুক পোস্টটি নিয়ে গত (১৭ মার্চ) বুধবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল রিপোর্টার্স ইউনিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সাংবাদিকতার নীতি বিবর্জিত কর্মকাণ্ডের জন্য আবুজার বাবলাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন,সংগঠনে তার সহ-সভাপতি পদ থেকে শুরু তার সাধারণ সদস্যপদও কেড়ে নেওয়া হয়।
এদিকে, এ ঘটনার পর শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন সোহেল জানিয়েছিলেন, প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেউ সমাজ কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা রাষ্ট্রের গুরুত্তপূর্ণ কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অপপ্রচার চালালে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার সদস্যপদ এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা দেখার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ।