ডিবিএন ডেস্কঃ যা আনুষ্ঠানিক দর হিসেবে প্রতি ডলারের মূল্য ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছে প্রতি ডলার বিক্রি করছে প্রায় ১০০ টাকারও বেশি দামে। আর খুচরা বাজারে প্রথমবারের মতো রেকর্ড মূল্য প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৩ টাকায়। মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ীরা দাবী করছেন যে ঈদুল আজহার পর থেকে ডলারের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে, কিন্তু সরবরাহ সেভাবে বাড়েনি। আবার ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সবাই খুচরা ডলারের জন্য খোলাবাজারেই আসছে। ফলে দাম বাড়ছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রায় প্রতিদিনই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছে, সংকটের সুযোগ নিয়ে ডলারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হচ্ছে।
অন্যদিকে, ব্যাংকগুলো দাবী করছে যে, সংকটের কারণে রেমিটার ও রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে তাদের বেশি দামেই ডলার নিতে হচ্ছে। এ কারণে তাদেরও বেশি দামেই ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার পর থেকে দেশে অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের আমদানির পরিমাণ ও মূল্য। মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল, শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য, খাদ্যপণ্য, জ্বালানি তেলসহ সব পণ্যের আমদানির পরিমান ও মূল্য এখন বেশ ঊর্ধ্বমুখী।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে পণ্য আমদানি বেড়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ। কিন্তু ব্যাংকের কাছে ডলার আসার উৎস রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।প্রবাসী আয়ের নিম্নমুখী প্রবণতা ও আমদানি ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে গত বছরের আগস্ট থেকে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে ডলারের দাম। ডলার বিক্রিসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েও ডলারের বাজারের অস্থিরতা থামাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবেই গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ১০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। যদিও ডলারের বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ১৮ শতাংশেরও বেশি।