বরগুনার তালতলীতে জন্মগতভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে নেই কোন ঈদের আনন্দ। বরং সন্তানই এখন মা বাবার কাছে বোঝা হয়ে বেঁচে আছেন। ১৬ বছর বয়সী মিরাজ ও ১৩ বছর বয়সী মেহেদী জন্মের পর থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী। অন্যের সাহায্য ছাড়া খাওয়া-দাওয়া কিছুই করতে পারে না। প্রতিবন্ধী এই দুই সন্তানকে নিয়ে জীবন কাটছে লোকমান ও শাহা বানু দম্পতির। দারিদ্র্যের কারণে এই দুই সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তারা।
তাদের পরিবারের উপার্জন সক্ষম কেউ নেই। তাদের বাবা লোকমান তিনিও কোনো কাজ করতে পারে না। একমাত্র মা দুই ভাইয়ের দায়িত্ব বহন করে চললেও তাদের বাড়িতে ঈদের আনন্দ নেই। মিরাজ ও মেহেদীর বাড়ি বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তারা।
স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লোকমান ও শাহা বানুর দুই ছেলে। ২০০৬ সালে জন্ম হয় বড় ছেলে মিরাজ। জন্মের পর থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী, দ্বিতীয় ছেলের জন্মের দুই বছর পরে সেও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়। তখন তাদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য পরবর্তীকালে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি তারা।
প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের মা শাহা বানুর সঙ্গে কথা হলে তিনি তার পরিবারের চরম দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, খুব কষ্টে দিন কাটছে আমাদের কোন কাজ করতে পারে না তাদের সকল কাজ আমার করে দিতে হয়। ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। সর্বশেষ বরিশালে ডাক্তার দেখানোর পরে একটু সুস্থ ছিল এখন আবার এই আগের মতো আছে। তাদের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক মা হয়ে এভাবে তাদের মৃত্যুর দিন দেখতে আমার খুব কষ্ট লাগছে।
প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, ছেলে দুটি খুবই অসুস্থ টাকা পয়সার কারণে তাদের চিকিৎসা করাতে পারছে না। আবার তাদের বাবা খুবই গরীব মানুষ ও কোন কাজ করতে পারে না। তাদের চিকিৎসা হলে তারা আবার স্বাভাবিক জীবনের ফিরতে পারে।
তালতলীয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুম্পার সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, একই পরিবারে চারজন সদস্য দুইজন পুরো মানসিক প্রতিবন্ধী ও তাদের বাবা লোকমান সেও কোন কাজ করতে পারে না। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে সহযোগিতা করার চেষ্টা করব এছাড়াও তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:১৬ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি