অলিউর রহমান নয়ন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : চয়ন মিয়া (১৪)। জন্ম থেকেই দুহাত-দুপা বাঁকা। হামাগুড়ি দিয়েও চলাফেরা করতে পারে না, কথাও বলতে পারে না ঠিকমত। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের মৃত বাবলু মিয়ার ছেলে সে। চয়ন মিয়া বড়ই এতিম। ১০ বছর আগে কাজের সন্ধানে মুন্সিগঞ্জে গেলে গাছের ডাল কাটতে গিয়ে প্রাণ হারান তার বাবা। এরপর চয়ন মিয়া ও ছোটবোন মুক্তা খাতুন (১২) হয়ে যায় এতিম। মা চম্পা বেগম (৪০) সহ তাদের আশ্রয় হয় দাদা মীর হোসেনের বাড়ীতে। মুক্তা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। আয় বলতে চয়নের প্রতিবন্ধী ভাতা। ভাতার সামান্য টাকা আর প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করা চাচার কিছুটা সহযোগীতায় চলছে তাদের জীবন।
দুই বছর আগে ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা অফিস প্রতিবন্ধী চয়ন মিয়াকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করে। বর্তমানে হুইল চেয়ারটির কয়েক জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। নতুন চেয়ার কেনার সামর্থ না থাকায় পুরাতন জরাজীর্ণ ও জোড়াতালি দেয়া ওই হুইল চেয়াটিতে বসেই দিন পার করছে চয়ন। আর স্বামী মারা যাবার ১০ বছর পার হলেও আজও বিধবা ভাতা জোটেনি চয়নের মা চম্পা বেগমের কপালে।
চম্পা বেগম বলেন, ছেলেটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারাদিন ভাঙ্গা চেয়ারে বসে থাকে। টাকার অভাবে একটা নতুন চেয়ার কিনে দিতে পারছিনা। তাই সমাজের বিত্তবান মানুষ, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে আমার অসহায় প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য একটি নতুন হুইল চেয়ার এবং নিজের জন্য বিধবা ভাতা কার্ডের আবেদন জানাচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ-হারুন জানান, চয়নের অসহায়ত্বের কাহিনী শুনে খুব খারাপ লাগলো। খুব দ্রুত চয়নের জন্য নতুন হুইল চেয়ার ও তার মায়ের বিধবা ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।