মার্কিন মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’ ও সমুদ্র গবেষণা সংস্থা ‘নোয়া’ বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছে, ২০০১ থেকে শুরু করে একুশ শতকের প্রথম দু’টি দশকে ২০১৮ সালটি ছিল চতুর্থ উষ্ণতম বছর। ২০১৯ সালটি হবে পঞ্চম উষ্ণতম।
শিল্প বিপ্লবের পর উনিশ শতকে বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ে যতটা বেড়েছিল, তার চেয়েও অন্তত ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেড়েছে, শুধু গত বছরেই। এই বছরেও প্রচণ্ড গরমে পুড়তে হবে বিশ্ববাসীকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও), নাসা এবং নোয়া- এই তিনটি সংস্থাই জানিয়েছে, ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের ১৯০টি দেশ শিল্প বিপ্লবের সময়ের চেয়ে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার অঙ্গীকার করলেও, এই শতাব্দীর শেষে পৌঁছে তা আদৌ সম্ভব হবে না। তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়ে যাবে।
রাষ্ট্রপুঞ্জ, নাসা ও নোয়া- তিনটি সংস্থাই বুধবার আলাদা ভাবে জানায়, ভয়ঙ্কর বিপদে পড়ে গিয়েছে সভ্যতা। সামনে এখন শুধুই মরণ-বাঁচনের প্রশ্ন। আর বেঁচে থাকার সেই সম্ভাবনাটাও ঝুলছে শুধুই একটা সুতার উপর। যার এক ও একমাত্র কারণ, আমরাই দ্রুত বিষিয়ে দিচ্ছি প্রকৃতি ও পরিবেশকে। ডব্লিউএমও-র সেক্রেটারি জেনারেল পেট্টেরি টালাস বলেছেন, ‘গত ২২ বছরের মধ্যে ২০টি বছরই ছিল গত এক শতাব্দীতে উষ্ণতম।’
ডব্লিউএমও, নাসা এবং নোয়া- তিনটি সংস্থাই জানিয়েছে, বন্যা, দাবানল, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। মরসুমগুলির স্বাভাবিক মেয়াদের রদবদল ঘটেছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে কমে গিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। তার ফলে, বিশ্বজুড়েই চাষবাস, সেচ দারুণভাবে মার খেয়েছে।
২০১৯-এর শুরুতেই গা পোড়ানো গরম দেখেছে অস্ট্রেলিয়া। গত দেড়শো বছরে এতটা গরম পড়তে দেখা যায়নি অস্ট্রেলিয়ায়। সুমেরুর আবহাওয়া (পোলার ভর্টেক্স) কিছু দিনের জন্য গ্রাস করেছিল মধ্য ও পশ্চিম আমেরিকার একটি বিশাল অংশকে। জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকটা পর্যন্ত।