সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গুরুতর অসুস্থ হয়ে কোমায় রয়েছেন এবং তার ছোট বোন কিম ইয়ো জং দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছিলো। তবে সেসব গুঞ্জনকে ভুল প্রমাণ করে প্রকাশ্যে দেখা দিয়েছেন কিম।
বুধবার (২৬ আগস্ট) সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর বর্ধিত এক সভায় অংশ নিয়েছেন বলে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ – এর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সভায় কিম মহামারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া করোনাভাইরাসের পাশাপাশি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানতে যাওয়া টাইফুন ‘বাভি’ নিয়েও আলোচনা করেছেন তিনি।
সম্প্রতি সীমান্ত বন্ধ থাকায় ও বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর কোরিয়া, এরপর করোনাভাইরাস মহামারি দেশটির অর্থনীতির উপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে বলে কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কেসিএনএ বলেছে, “মহামারি প্রতিরোধে মারাত্মক ভাইরাসটির প্রবেশ পথগুলো পরীক্ষা করার জন্য যে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে কিছু ত্রুটি পাওয়া গেছে বলে বৈঠকের মূল্যায়নে উঠে এসেছে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানায়নি উত্তর কোরিয়া, কিন্তু গত মাসে কিম ভাইরাসটি দেশটিতে ‘প্রবেশ করে থাকতে পারে’ এমন মন্তব্য করে লকডাউন জারি করেছিলেন।
ওই সময় দেশটিতে এক ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল, কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পরে পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি।
উত্তর কোরিয়ার কাসং শহরে করোনভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহভাজন এক রোগীর খোঁজ পাওয়ার পর সেখানে লকডাউন জারি করা হয়েছিল, তিন সপ্তাহ পর চলতি মাসে কিম ওই লকডাউন তুলে নিয়েছেন।
পলিটব্যুরোর বৈঠকে আসন্ন টাইফুন বাভির তাণ্ডব থেকে লোকজন ও ফসল রক্ষার জন্য নেয়া রাষ্ট্রীয় জরুরি পদক্ষেপগুলোও পর্যালোচনা করা হয়।
ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এই রাষ্ট্রটিতে খাদ্য সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি জানিয়েছে, আগামী বছর নতুন একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি কংগ্রেসের আয়োজন করবে তারা।
জাতীয় অর্থনীতি ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুতর বিলম্ব হচ্ছে, দলীয় এক বৈঠকে এমনটি আলোচিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।