মেডিকেলসহ সব ধরনের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা বাতিল এবং মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট পুনঃ:প্রকাশের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে আজকের মধ্যে ফলাফল পুনঃপ্রকাশ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
এসময় তারা ‘অবিলম্বে ফলাফল বাতিল করো- করতে হবে’, ‘কোটা না মেধা- মেধা মেধা’, ‘মেডিকেলের ফলাফল-পুনঃপ্রকাশ করতে হবে’, ‘মেডিকেলে কোটা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয় মাহিন সরকার বলেন, ছাত্র আন্দোলনের শুরুটাই হয়েছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন দিয়ে। জুলাই আন্দোলনের পরে আবারও আমাদেরকে কোটা বাতিলের বিষয় নিয়ে আমাদের আবার রাস্তায় নামতে হয়েছে। শুধু মেডিকেল নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে। তা না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচিতে বাধ্য হবো। ৭৫ এর বেশি মার্ক পেয়ে একজন শিক্ষার্থী চান্স পায়নি, একজন ৪১ মার্ক পেয়েও মেডিকেলে চান্স পেয়ে গেছে। এখন কি কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে? যারা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আছেন তারা অনেক আগেই মেডিকেলের পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন কারা এই কোটা সুবিধা ভোগ করছেন? চেতনা ব্যবসা বাংলাদেশে আর চলবে না। চেতনা ব্যবসা দিয়ে কেউ আর রাজনীতি করতে পারবে না বা ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের যে উপদেষ্টা পরিষদ বসে আছেন, নাহিদ ভাই , আসিফ ভাই আছেন, উনারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকার পরেও কেন আমাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হলো। আমাদের দাবি মেনে নিন নইলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। আমরা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃ:প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। সঙ্গে সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অযৌক্তিক সব কোটা বাতিল করতে হবে। তা না হলে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪-২৫ এর ফলাফল অনুযায়ী, কোটার বদৌলতে ১০০ নম্বরের মধ্যে কেবল ৪১-৪৬ নম্বর পেয়েও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী। ফলে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নম্বর পেয়েও যোগ্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশেরই মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নিটোরের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, আমার একজন ছেলে বা মেয়ে ৭৩ পেয়েও মেডিকেলে চান্স পাচ্ছে না অথচ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩৬ বা ৩৭ পেয়েও চান্স পেয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তিত বাংলাদেশে কেনো এই বৈষম্য থাকবে। আমরা এই ফল মানি না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রয়োজনে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ সারাদেশের সব মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামবো। সুতরাং এই আন্দোলনকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। আজকের মধ্যেই ফলাফল বাতিল করতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা এসে সংহতি জানান।
সর্বস্তরের শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম