চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ দেশের পাহাড়জুড়ে শুরু হয়েছে বৈসাবি’র আমেজ। এরমধ্যে রাঙ্গামাটির ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপি বৈসাবি মেলা। তবে এখনও উৎসবের বাকী আরো ৬ দিন। ইতিমধ্যে পাহাড়িরা তাদের সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক- বিষু-বিহু’র জন্য কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছে। পাহাড় মেতেছে বৈসাবি’র আনন্দে।
আসছে আগামী ১৩ এপ্রিল মূল বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু’র দিন দেখা যাবে সকাল থেকেই ছোট-বড় যুবক যুবতি হাতে হাত মিলিয়ে এবাড়ী ও বাড়ী ঘুরছে আর খাচ্ছে সুস্বাধু প্রধান খাদ্য পাঁজন (সবজী) ও সুরা (মদ)। সকালে শহর গ্রামে দেখা যাবে যুবক যুবতিরা ঘুরছে আর কোন কোন যুবক বলছে একটু পাঁচন, একটু সুরা ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে ঘুরবো পাড়া, উ-হু-হু-হু।
আগামী ১২ এপ্রিল ভোর সকালে নদীতে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিজু-সাংগ্রাই- বৈসুক-বিষু-বিহু’কে স্বাগত জানাবে যুবক যুবতি ও অবাল বৃদ্ধ বনিতারা। ফুল ভাসিয়ে এসে শুরু হবে নিজ নিজ বাড়ীর প্রধান প্রবেশ দ্ধারে ফুল দিয়ে সাজানোর পালা। সারাদিন নিজ বাড়ীতে বসে যুবতিরা অতিথি আপ্যায়নের সকল ব্যবস্থা করে রাখবে। ১৩ এপ্রিল হবে এ উৎসবের মূল পর্ব অর্থাৎ খাওয়া দাওয়া। খাদ্যের তালিকায় প্রধান হলো বিভিন্ন সবজী দিয়ে তৈরী সুস্বাধু ঐতিহ্যের পাঁজন। এটি খেতে যেমন স্বাদ তেমন তৈরীতেও যথেষ্ট ব্যয় বহুল। তাই অনেকেই রাত জেগে এ পাঁজন তৈরী করেন।
এর সাথে রয়েছে বিরানী, মিষ্টিজাত দ্রব্য, ঐতিহ্যবাহী পিঠা, বাহারী ফলের সমাহার, নানা রকমের সুস্বাদু নাস্তা, আর নিজেদের তৈরী সুরা (মদ) বিঝুর দিনে পাঁজনের পাশাপাশি এ সুরা অবশ্যই অবশ্যই থাকবে এটি না থাকলে যেন পুর্নতা পায়না বিজুর আনন্দ।
মূল বিজুর দিন সকাল থেকেই পাহাড়ী বাঙ্গালী ভেদাভেদ ভুলে বিজু- সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু’র আনন্দ ভাগ করতে এবং ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু পাঁজন খেতে বাড়ী বাড়ী ভীর করবে সকল বয়সের মানুষ। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৬টি ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বড়–য়া জনগোষ্ঠীও এটিকে বিহু পরব এবং হিন্দু জনগোষ্ঠী চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে হিসেবে পালন করে আসছে আদিকাল থেকেই আর সকল জনগোষ্ঠীরাই খাদ্যের তালিকায় প্রথম ও প্রধান খাদ্য হলো পাঁজন (সবজী)।
আগামী ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষকে বরণ করবে, পাশাপাশি আগের দিন বৈসাবীর আনন্দ শেষে ১৪ এপ্রিল গজ্যা পজ্যা দিন হিসেবেও পালন করবে। ভোরে বৌদ্ধ মন্দিরে অথবা নিজ গৃহে বুদ্ধের প্রতিমূর্তির সামনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে, সকল প্রাণীর সুখ শান্তি কামনা করবে এবং বয়ো বৃদ্ধদের স্লান করাবে।
এভাবেই প্রতি বছর বিজু’র অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী বাঙ্গালীর চলে আনন্দের মিলন মেলা। এবারও দেখা যাবে মুল বিজু-সাংগ্রাই- বৈসুক-বিষু-বিহু’তে সকাল থেকেই ছোট-বড় যুবক যুবতি হাতে হাত মিলিয়ে এবাড়ী ও বাড়ী ঘুরবে খাবে সুস্বাধু ও প্রধান খাদ্য পাঁজন (সবজী) ও ঘরে তৈরী সুরা (মদ) আর বলবে একটু পাঁজন, একটু সুরা ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে ঘুরবো পাড়া, উ-হু-হু-হু।