গবেষণা করে পানিতে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তবে বাংলাদেশে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারপরেও পানিতে করোনার উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা করা হবে বলে জানা গেছে। প্রথমেই ঢাকা ওয়াসার পানিতে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
রোগীদের বর্জ্য থেকে ভাইরাস পানিতে মিশে সংক্রমণ ছড়ায় কিনা তা দেখার জন্যই মূলত এ পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানিতে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। তবে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, সংক্রমণ ক্ষমতা কেমন, সংক্রমিত হয় কিনা এসব গবেষণা করে দেখা উচিত। রোগীর বর্জ্য সরাসরি স্যুয়ারেজে না ফেলারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গবেষণা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ব্যবহৃত পানি ও মলে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাদের হাঁচি ও কাশিতেও রয়েছে এই ভাইরাস। রোগীদের বর্জ্য সরাসরি স্যুয়ারেজে যাচ্ছে। এসব বর্জ্য বিভিন্নভাবে নদীতে গিয়ে মিশছে। তবে স্যুয়ারেজের পানিতে এই ভাইরাস কতক্ষণ বেঁচে থাকে অথবা ভালো পানিতে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, এরকম কোনো গবেষণা আমাদের দেশে এখনো হয়নি। তিনি বলেন, পানিতে করোনাভাইরাস আছে কিনা তা দেখা দরকার। কারণ, নদীর পানি মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। শোধনাগারে শোধন হয়ে ঢাকায়ও আসছে এই পানি। এই পানিতে যদি ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকে তাহলে বিপদ।
পানযোগ্য পরিশোধিত পানিতে কোভিড-১৯ রয়েছে এমন কিছু আমরা এখনো পাইনি বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম। তিনি বলেন, চেষ্টা করছি আমাদের পানিতে করোনার অস্তিত্ব আছে কিনা তা পরীক্ষা করার।
নিজস্ব ল্যাব অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।
গবেষণায় জানা গেছে, ময়লা বা অন্যের ব্যবহার করা পানিতে বেশ ভালো মতো বেঁচে থাকে করোনাভাইরাস। সুইডেন, নেদারল্যান্ডস এবং আমেরিকার মতো দেশে যেখানে প্রায় দশ লাখের কাছাকাছি মানুষের বাস, সেই এলাকার পানির নমুনা ফাইল করে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
ফলাফলে জানানো হয়, প্রতিদিনের হাতমুখ ধোয়ার পর ব্যবহৃত পানি, শৌচকাজের পানিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ভয় রয়েছে। প্রতিবেদনে এমন ব্যাখ্যা দেন নেদারল্যান্ডসের কেডব্লুআর ওয়াটার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে এক গবেষক।
ভারতের ইমিউনোলজি বিভাগের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. শুভজিৎ বিশ্বাসও বললেন, ব্যবহার করা পানির মাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হতে পারে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের সম্ভাবনাও আছে। কোভিড সংক্রমিত মানুষের মল থেকেও ছড়াতে পারে এই রোগ।