রানা তসলিম উদ্দিন-তার আসল ও প্রথম পরিচয় তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব,পর্তুগালের কমিউনিটি ব্যাক্তি.আশির দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের পর বাংলাদেশ ত্যাগ করে ট্যুরিস্ট ভিসায় হংকং পাড়ি জমান ১৯৮৯/১৯৯০ সালে.ভাগ্য অন্নেষনে হংকং পাড়ি জমলেও সেখানে জীবন স্থায়ী হতে পারবেন না ভেবে ১৯৯১ সালে পারি জমান পর্তুগালে।সেই থেকে আজ অবধি আছে পর্তুগালের.ব্যাক্তিগত জীবন বলতে ২ সন্তানের জনক, কমিউনিটির প্রবীণ ব্যাক্তি এবং একজন পরিচিত মুখ.এই পরিচয়ের আড়ালে তিনি নিজেকে আরো এক পরিচয়ে পরিচয় দেন তা হলো তিনি লিসবন সিটি কাউন্সিলর.কখনো লিসবনের জুনতার (সান্তা মারিয়া মাইওর) কাউন্সিলর। লিসবনের মানুষ কাউন্সিলর না জানলেও তিনি দেশি মিডিয়া গুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছেন তিনি লিসবন সিটি কাউন্সিল পরিষদ থেকে ২ বার নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন!কমিনিটির প্রবীণ ওনার সমসাময়িক ব্যাক্তিবর্গ যারা ছিলেন বা আছেন তাদের থেকে জানা গেছে আসল সত্য. আসলে তার সত্যতা খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো তার কাউন্সিলর সাজার গল্প.জি আজকে সেই ভূয়া লিসবন সিটি কাউন্সিল নিয়েই বলব.
গত ৩০ বছর ধরে লিসবনে বসবাস রানা তসলিম উদ্দিনের.দীর্ঘ এই যাত্রায় কমিউনিটিতে অনেক কিছু করেছেন,বর্তমানে তিনি পর্তুগালের লিসবনের বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায় একটি মসজিদ কমিটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আছেন.পর্তুগিজ নাগরিক ও মিডিয়ায় তিনি –Centro Islamico do Bangladesh (CIB) প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত অথচ সেই ২০১৩ সাল থেকে তিনি তিনি নিজেকে কাউন্সিলর হিসাবে আছে এমনটা দাবি করে আসছে.তিনি এটা করতে পেরেছেন শুধুমাত্র তার ভাষাগত দক্ষতা এবং লোকাল লোকজনের সাথে পরিচিতির কারণে.তার সময়ের যত মানুষ পর্তুগাল এসেছেন তাদের অনেকে ঠিকমত পর্তুগিজ বা ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারেননি.আর তিনি ছিলেন একমাত্র ব্যাক্তি যিনি ১৯৯৫ সাল থেকে পর্তুগালে দোভাষী হিসাবে কাজ করে আসছেন. আর এই ভাষাগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণের কাজে পেয়েছেন ব্যাপক পরিচিতি. কাজ করেছেন কমিউনিটির অনেক মানুষের সাথে.তবে অবদানের কথা আজকে নয় একটা অসত্যকে তিনি অনেক বছর যাবৎ লালন করে আসছিলেন যে তিনি লিসবন সিটির নির্বাচিত কাউন্সিলর. আসলে কি তিনি লিসবনের সিটি বা জুনতার (মিনিসিপাল পরিষদ)কাউন্সিলর? এই ব্যাপারে জানতে আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের কাছে.তারা সাফ জানিয়েছেন তিনি কোনো কাউন্সিল বা পারিষ থেকে নির্বাচিত হননি.দূতাবাস কতৃপক্ষ এর বেশি কিছু বলতে তারা রাজি হননি. যেহেতু বাংলাদেশি সাংবাদিকবৃন্দ এবং দেশি টিভিতে নিউজ গুলো পর্তুগাল থেকে করা সেহেতু তারা প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদকর্মী যা লিখে দেন তাই তারা পাবলিশ করেন. রানা তাসলিম উদ্দিন – লিসবনের সিটি কাউন্সিলর নির্বাচিত এই মর্মে নিউজ করেছিলেন সাংবাদিক নাইম হাসান পাভেল (সংবাদ লিংক : https://bit.ly/31sjzsh)
সাংবাদিক রাসেল নামের আরেক জন ওনাকে নিয়ে বরাবর ই কখনো লিসবন সিটির কাউন্সিলর, কখনো জুনটা অফিসের কাউন্সিলর,কখনো জুনতার (সান্তা মারিয়া মাইওর ) কাউন্সিলর, পরিচয় দিয়ে বেশ কিছু সংবাদ পরিবেশন করেছেন. আসলে নিউজ গুলোর কোনো সত্যতা নেই. (রাসেল আহমেদের নিউজ লিংকস – https://bit.ly/31IfZKP), লিঙ্ক ২- (https://bit.ly/2ZnIQkx) এই ব্যাপারে জানতে লিসবনের এক ভাই মেইল করেছিলেন junta fregusia de santa maria maior এর কমিনিকেশন ডিপার্টমেন্টে.আসলে তার মেইন পদ বা রুলটা কি জুনতা অফিসের সাথে? মেইলের উত্তরে ওনাকে জানানো হয়েছে তিনি অনি কোন কাউন্সিল না, জুনতা অফিসে কোনো কাউন্সিল পদ নেই. যেহেতু আমরা লিসবনে থাকি কৌতুলবশত একটু আগ্রহী হয়ে ওনার বেপারে আরো একটু জানতে চেষ্টা চালাই.আমি শুধু ওই ভাই এর কপিটাতে বিশ্বাস করিনি কিন্তু একটা সময় ৩ টা ডিপার্টমেন্ট থেকে ওনাকে যখন বলা হলো আসলে ওনি কাউন্সিলর না তখন বিশ্বাস না করে উপায় নেই.তার ইমেইলের কপিটা সংযুক্ত করা হল প্রমান হিসাবে।
যে জুনতা অফিসের কাউন্সিলর তিনি নিজেকে দাবি করছে আসছিলেন সেখানে তাকে মেইল করে জানতে চাওয়া হয়েছিল তার পদবি এবং জুনতা অফিসের সাথে তার সম্পর্কিত কি তা নিয়ে. মেইলের উত্তরঃ খুব পরিষ্কারভাবে বলে দিয়ে ওনার সাথে জুনতার সম্পর্কিত কি সব তথ্য।বলা হয়েছে এই পারিস (মিউনিসিপ্যাল) এর জন্য রানা তাসলিম উদ্দিন একজন বাংলাদেশী কমিনিটির মুখপাত্র হিসাবে কাজ করছেন।তিনি এই পারিস এর এসেম্বলি মেম্বার (যেকোনো পর্তুগিজ নাগরিক অধিকার রাখে এসেম্বলি মেম্বার হবার )এবং তিনি লোকাল গভর্নমেন্টের সাথে কাজ করেন নিচের ছবিটি দেখে পরিষ্কার বুঝতে পারবেনঃ
এবার আসি একটু উচ্চ পর্যায়ে সত্যতা যাচাই নিয়ে. যেহেতু মেইলটা ওই ভাই ব্যাক্তিগতভাবে করেছেন তাকে ব্যাক্তিগতভাবে ই তারা উত্তর দিয়েছিল. সংবাদ প্রকাশের স্বার্থে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রেসিডেন্টকে প্রথমে ইমেইল করি পরে অফিসে যেয়ে তাদের সাথে কথা বলি. কোভিডি -১৯ এর কারণে প্রেসিডেন্ট সান্তা মারিয়া মাইওরের প্রেসিডেন্ট ড. মিগেল কোয়েলো উত্তর দিতে দেরি করেন।অবশেষে তার ক্যাবিনেট থেকে পরিষ্কার উত্তর আসে রানা তাসলিম উদ্দিনের ব্যাপারে।প্রেসিডেন্টের ই মেইল কপিটিও সংযুক্ত করা হল প্রমান হিসাবে যেটি দিয়ে প্রমান পাওয়া যাই ওনি আসলে কে?
অনেকে যেহেতু ওনাকে অনেক ভাবে পরিচয় দিচ্ছে এমনকি ওনি নিজেও দাবি করেন তিনি কাউন্সিলর তাহলে যার অধীনে তিনি নির্বাচন করেছেন তিনি বর্তমানে প্রেসিডেন্ট তার কাছে ২টি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হলো।
১) রানা তাসলিম উদ্দিনের সাথে জুনতার সম্পর্ক কি,ওনার ভূমিকা কি?
২) ওনি কাউন্সিলর কি না?
তারা জুনতার প্রেসিডেন্টের হয়ে ফিরতি ইমেইলে জানান : (পর্তুগীজ ভাষায় লিখা নিচের ইমেইল কপি )
১) জনাব রানা তাসলিম উদ্দিন বাংলাদেশী কমিউনিটির একজন মুখপাত্র এবং জুনতা অফিসের ও বাংলাদেশী কমিউনিটিতে যোগসাজশেকারী হিসাবে কাজ করেন.
২) রানা তাসলিম উদ্দিন সাহেব ২বার সোসালিস্ট পার্টির ক্যান্ডিডেট হিসাবে জুনতার এসেম্বলির পক্ষ থেকে নির্বাচন করেন কিন্তু কোন কালেই তিনি নির্বাচিত হননি.তিনি যারা নির্বাচিত হয়েছে তাদের সাথে বেশ কিছু (বিভিন্ন) মিটিংয়ে যোগদান করেছেন।নিচের ছবিতে দেখেন।
আর তিনি এই এই প্রচারণা কে কাজ লাগিয়ে সেজে গেলেন ভুয়া লিসবন সিটির কাউন্সিলর. সে দেশের মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন টিভি টক শো গুলোতে রীতিমত মিথ্যাচার করে গেছেন.এখনো তিনি নিজেকে সিটি কাউন্সিলর দাবি করে আসছেন.গত ৩ দিন আগে ওনার ফেইসবুক পেইজে দেখলাম জালালাবাদ টিভি নামের এক অনলাইন টিভিতে তিনি নিজেকে কাউন্সিলর দাবি করেছেন.সামাজিকতা রক্ষার্থে লিসবনের মানুষ এখন সত্যটা জেনে থাকলেও মুরব্বি হিসাবে ওনারে নিয়ে সামনে কিছুই বলতে চায় না কিন্তু এটাই ভুল ওনাকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর এই মিথ্যাকে সত্য বলে জিইয়ে রাখার।আজকের পর ওনার কাছে আশা করি বিষয়টা পরিষ্কার হবে আর পর্তুগাল সহ দেশে বিদেশেও ওনার ব্যাপারে মানুষ আসল পরিচয়টা জানবে.
এবার আমরা সরাসরি লিসবন সিটি কাউন্সিল পরিষদে তাদেরকেও মেইল করলাম.ফোন করে নিশ্চিত হলাম অনি আসলে কোনো কাউন্সিলর না.লিসবন সিটির ডেপুটি সেক্রেটারি নিজে মেইলের উত্তর দিলেন রানা রাসলিম উদ্দিনের ব্যাপারে.আসুন দেখি ডেপুটি ইমেইলে তাকে নিয়ে কি বলছে. লিসবন সিটি কাউন্সিল থেকে প্রাপ্তি ই মেইলের কপি সংযুক্ত করলাম. তারা লিখেছেন:
- রানা তাসলিম উদ্দিন কোন কালেই কোনো সিটির কাউন্সিল পরিষদে নির্বাচনে জয়লাভ করেনি. নিচের ছবিতে দেখুনঃ
ওনাকে বাংলাদেশ ইসলামী সেন্টার এর সভাপতি হিসাবে যথেষ্ঠ সম্মান করে মানুষ, একটা মসজিদ কমিটির মত জায়গায় যুক্ত থেকে সমাজের এত মিথ্যার আশ্রয় না নিলে ওনার কোনো ক্ষতি হতো না.সব কিছু ওনি জানার পরে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে এর প্রধান কারণ হল তিনি সমাজে এই মিথ্যা টাইটেলধারী হিসাবে পরিচয়টা অনেক বছর যাবৎ দিয়ে আসছেন.কিন্তু মজার বিষয় হল তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ওনার বানানো গল্প কি জনগন শুনবে সেটা ওনার মাথায় রাখা উচিত ছিল.ওনি যদি ওনার অবস্থান মানুষের সামনে নিজেই পরিষ্কার করতেন তাহলে হয়ত ওনাকে নিয়ে কেই উদঘাটন করতে যেতনা. লিসবনবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার ওনি কখনো করবে না জানি কিন্তু আজকের পর থেকে পুরো পর্তুগাল সহ দেশ বিদেশের সবাইকে জানানো দরকার বলে সত্যটা তুলে আনলাম. আশাকরি অদূর ভবিষ্যতে ওনি নিজেকে আর কোনো মিথ্যাচারের আশ্রয়ে ওনার নিজের সম্মানহানি করবেন না.তিনি তার সম্মান রাখতে না চাইলে দেশ বিদেশে বেইজ্জতি হবে এটাই স্বাভাবিক.মসজিদ কমিটির সভাপতি হয়েও কেন তাকে সমাজে এত বড় একটা অসত্য কে সত্য বলে জাহির করে যাচ্ছেন জনাব রানা সাহেবের কাছে প্রশ্ন রইলো? এটা কি ভণ্ডামি নয় সাধারণ মানুষের সাথে?
সুত্রঃ www.athensbd24.com