বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কর্মস্থলেই প্রাণ হারান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের মরদেহ দেশে আনা নিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয় পরিবারের সদস্যদের।
বিদেশের মাটিতে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশি কর্মীর মরদেহ তার পরিবারের মতামত সাপেক্ষে দেশে আনার উদ্যোগ নেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মোট ৩ হাজার ৭৯৩ জন বাংলাদেশি কর্মীর মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। এরমধ্যে বৈধ কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৭৬ জন। আর অবৈধভাবে কর্মরত কর্মীর সংখ্যা ১১৭ জন।
এর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে এসেছে ৩ হাজার ৩৫৩ জনের মরদেহ। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ৩৭৪ ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে এসেছে ৬৬ জনের মরদেহ।
এছাড়া, ২০১৭ সালে ৩ হাজার ৩৮৭জন, ২০১৬ সালে ৩ হাজার ৪৮১ এবং ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮৩১ জনের মরদেশ দেশে আনা হয়।
জানা গেছে, বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় কেউ মারা গেলে মরদেহ দাফনের ব্যাপারে পরিবারের মতামত নেয়া হয়। পরিবার যদি সংশ্লিষ্ট দেশে দাফনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তাহলে সেদেশেই তাকে দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর যদি পরিবার মরদেহ দেশে দাফনের জন্য মতামত দেয় সেক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকেন।
যদি কারো মরদেহ দেশে পাঠাতে নিয়োগকর্তা খরচ বহনে অপারগতা প্রকাশ করে বা মৃতের পরিবার দেশে আনার খরচ বহনে অক্ষম হয় তাহলে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিলের অর্থায়নে মরদেহ দেশে আনা হয়।
এছাড়া অবৈধ ভাবে যাওয়া কর্মীদের মরদেহও দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে আনার ব্যবস্থা করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মরদেহ পরিবহন ও দাফনের খরচ বহনের জন্য ৩৫ হাজার টাকার চেক দেয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
মরদেহ হস্তান্তরের পরই ৩ লাখ টাকা অনুদান দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যারা ছুটিতে এসে দেশে মৃত্যুবরণ করেন তাদের পরিবারকেও এ অনুদান দেয়া হয়। তবে যারা অবৈধভাবে বিদেশে যান বা বিদেশে গিয়ে অবৈধ হয়ে যান তাদের পরিবারকে এ অনুদান দেয়া হয় না।
জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টি দেশে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছেন। দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন এসব প্রবাসীরা।