ডিবিএন ডেস্কঃ পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে টিকটক বানানো সেই যুবককে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল রোববার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিআইডির সাইবার ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ।
আজ সোমবার (২৭ জুন) মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেছেন, পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জেনেছি, এত বড় একটা স্থাপনার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না। এতে বোঝা যায় নাট-বল্টু হাতে দিয়ে খোলা হয়নি, নাট-বল্টু খোলার জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ আরো বলেন, পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খোলা ওই যুবকের নাম বায়েজিদ তালহা। তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। তিনি রাজধানীতে বেসরকারি চাকরি করেন।
প্রসঙ্গত, Kaisar71 নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের ৩৬ সেকেন্ডের সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খোলার ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক পদ্মা সেতুর কংক্রিটের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লোহার রেলিংয়ের দুটি নাট খুলছেন। এই নাট দুটি দিয়ে লোহার রেলিংটি আটকানো রয়েছে কংক্রিটের রেলিংয়ের সঙ্গে। এরপর সেই যুবক নাট দুটি বাঁহাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুলে ডানহাতে নেন এবং আবার বাঁহাতের ওপর রাখেন।
ভিডিও ধারণকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।’ নাট হাতে নিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের… পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
এ সময় পাশ থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, নাট খুলে ভাইরাল করে দিয়েন না।
বায়েজিদের টিকটক অ্যাকউন্টে ভিডিওটি আপলোড করার পর ফেসবুকেও সেটি ভাইরাল হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। ওই যুবকের এমন কাণ্ড দেখে অনেকেই তার শাস্তি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গেল শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক মানুষ উঠে পড়েন মূল সেতুতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। আর এরই ফাঁকে আলোচিত ভিডিওটি করেন বায়েজিদ।