বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যস্ত তখন কেনিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো পঙ্গপাল ঠেকাতে টালমাটাল। কিছু দিনের ব্যবধানে দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় ফসল খেকো পতঙ্গের দল হানা দিয়েছে। যা আগের বারের চেয়েও আকারে ২০ গুণ বড়৷ ফলে মারাত্মক খাদ্য সংকটে পড়েছে ইথিওপিয়া।
জাতিসংঘ বলছে, পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে এরইমধ্যে দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল উজাড় করে ফেলেছে পঙ্গপালের ঝাঁক, সেখানে এখনই অন্তত ১০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সোমবার ইথিওপিয়ান সরকারের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে পূর্ব আফ্রিকায় পঙ্গপাল পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। শত শত কোটি পঙ্গপাল চষে বেড়াচ্ছে এ অঞ্চলে। এদের কিছু কিছু ঝাঁকের আকার রীতিমতো রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর চেয়েও বড়।
জানা গেছে, পঙ্গপালেরা এরইমধ্যে ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া, জিবৌতি, ইরিত্রিয়া, তানজানিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান ও উগান্ডায় এ পতঙ্গের প্রকোপ গত ৭০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে।
এফএও জানিয়েছে, পঙ্গপালের হানায় ইথিওপিয়ায় বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গম-ভূট্টার মতো শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কমে গেছে গো-চারণ ভূমিও। দেশটিতে খাদ্য সহায়তা আবশ্যক হয়ে পড়া ১০ লাখ মানুষের ৭৫ শতাংশই সোমালি ও ওরোমিয়া অঞ্চলে বসবাস করেন।
জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, ইথিওপিয়ায় এরইমধ্যে ৮৫ লাখ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে। এছাড়া কেনিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা ও তানজানিয়ার অন্তত দুই কোটি মানুষ পঙ্গপালের কারণে খাদ্য সংকটে পড়েছেন। তাদের জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
আফ্রিকার দ্বিতীয় ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ইথিওপিয়ায় অন্তত ১১ কোটি মানুষের বসবাস। সরকারি হিসেবে, এরইমধ্যে সেখানে ৭৪ জনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। তবে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর মতোই পরীক্ষাস্বল্পতা ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে সেখানে দ্রুতই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: ডয়চে ভেলে, আল-জাজিরা ও দ্য সান।