খুলনা প্রতিনিধিঃ খুলনা শিপইয়ার্ড লি. বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক (এলসিটি) নির্মাণ করবে। গতকাল বুধবার (১৫ জুন) খুলনা শিপইয়ার্ড চত্বরে এসব এলসিটি নির্মাণের কিল লেয়িং অনুষ্ঠিত হয়। আর এগুলো হবে এযাবৎকালে দেশে নির্মিত সর্ববৃহৎ এলসিটি।
খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজীজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর খুলনা নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এছাড়াও কিল লেয়িং অনুষ্ঠানে খুলনা শিপইয়ার্ড এর উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃক জাহাজ নির্মাণ এটাই প্রথম নয়। এর আগেও এ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য ৫টি পেট্রোল ক্র্যাফট, ২টি লার্জ পেট্রোল ক্র্যাফট, ২টি টাগ বোট এবং ৬টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ইউটিলিটি সফলভাবে নির্মাণ করে হস্তান্তর করেছে। আর এখন সর্ববৃহৎ দৈর্ঘ্যের এলসিটি নির্মাণ করছে। এগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতার প্রমাণ। কেবল নৌবাহিনীর জন্য নয় বরং কোস্টগার্ড, মোংলা বন্দর, পায়রা বন্দর, মৎস্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ করে খুলনা শিপইয়ার্ড দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। মৃতপ্রায় এ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে তার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করেছে এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সঠিক নেতৃত্ব, কর্মনিষ্ঠা ও সততা যে একটি প্রতিষ্ঠানকে সফলতার অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে তার সফল উদাহরণ খুলনা শিপইয়ার্ড।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য নির্মিত এ তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক (এলসিটি) দেশের সবচেয়ে লম্বা দৈর্ঘ্যর (৭০ মিটার) এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক যাতে অত্যাধুনিক মেশিনারি এবং যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হবে। জাহাজ তিনটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা এবং দেশের অভ্যন্তরের নদীগুলোয় অপারেশন সক্ষম হবে। প্রতিটি জাহাজে একই সাথে ছয়টি মাঝারি মানের ট্যাংক পরিবহন করা যাবে। এ ছাড়াও ছয়টি মাঝারি মানের ট্যাঙ্কের পরিবর্তে প্রতিটি জাহাজ পাঁচটি মিডিয়াম আর্টিল্যারি গান ভেহিকেল অথবা ১২টি এপিসি অথবা ১৮টি মিলিটারি ট্রাক পরিবহনে সক্ষম হবে। আর এলসিটিগুলোর প্রাথমিক কাজ হবে যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের উভচর অভিযান পরিচালনা এবং ট্যাংক, এপিসি-সহ সাপোর্ট ইউনিট ও ল্যান্ডিং ফোর্স পরিবহন করা এবং উপকূলীয় এলাকায় মানবিক সহায়তায় ত্রাণসামগ্রী পরিবহন করা। জাহাজ তিনটি আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি লয়েডস রেজিস্ট্রারের (ইংল্যান্ড) নীতিমালা অনুসরণ করে নির্মিত হবে।