মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার পূর্বধলায় লিপি আক্তার (৩৫) নামে এক
গৃহবধূকে নিজ ঘরে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। ওই ঘর থেকেই গলাকাটা অবস্থায় রাসেল মিয়া (৩০) নামের
এক যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত লিপি পূর্বধলা উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের স্ত্রী। আর রাসেল একই বাড়ির
আলাল উদ্দিনের ছেলে ও লিপির স্বামীর চাচাতো ভাই।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নিহত লিপি আক্তারের স্বামী আজিজুল হক পঞ্চগড়ে বিজিবি সদস্য হিসেবে
কর্মরত আছেন। আলিফ নামে তাদের ১২ বছরের এক ছেলে রয়েছে। শনিবার রাতে লিপি আক্তার তার ছেলেকে
নিয়ে নিজ ঘরের এক পাশে ও একই ঘরের অন্যপাশে লিপির দেবর সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাত তিনটার দিকে হঠাৎ ঘরে গোঙ্গানির শব্দ শুনে তারা জেগে দেখেন ঘরের মেঝেতে
লিপি ও রাসেল গলা কাটা অবস্থায় পড়ে আছেন। তখন তাদের চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে আহত দুইজনকে
উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিপিকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাসেলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
লিপির শ্বশুর জালাল উদ্দিন জানান, তার ছেলে আজিজুল প্রায় ১৫ বছর আগে বিজিবিতে যোগদান করেন। এর
কিছু দিন পর উপজেলার জারিয়া গ্রামে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও গত ৩/৪ বছর ধরে
লিপির সঙ্গে রাসেলের পরকীয়ার সম্পর্কের কথা শোনা যাচ্ছিল। এক সপ্তাহ আগেও আজিজুল ছুটিতে বাড়িতে এলে
এ নিয়ে পারিবারিকভাবে মিমাংসা করে কর্মস্থলে ফিরে যান।
খবর পেয়ে নেত্রকোনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খাতুন, পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক
(তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম ও ময়মনসিংহ থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রামই সিন
ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন,
প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পরকীয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি
(কাগজ কাটার এন্টিকাটার) উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ঘটনার প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে।