মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: চলতি ধনু নদের পানি বৃদ্ধির ও অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থার কারণে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনু নদের তীরবর্তী চরপাড়া এলাকাতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে প্রায় অর্ধশত বসত বাড়ি ও কয়েক’ শ বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে পরিদর্শন করছেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোঃ মঈনউল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবার নদীর পারে উঁচু জায়গায় ঘর-দরজা, ধান-চাল, জিনিসপত্র, গরু- বাছুর নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আর কিছু পরিবার পাঁচহাট গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
ধনু নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে এক মাস আগে এলাকার লোকজন নিজ উদ্যোগে বাঁশ বস্তা দিয়ে বাঁধ দিলেও তা কোন কাজে আসেনি।
নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভিত্তিতে নদী খননের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানান এলাকাবাসী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া জব্বার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচএম আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ এরশাদুল আহমদ, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান সুমন চক্রবর্তী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হেপী রায়, গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃআতাউর রহমানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জেলা প্রশাসক মোঃ মঈনউল ইসলাম নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের উদেশ্যে বলেন, ইতিমধ্যে ৪৬ টি পরিবারের জন্য ৪ শতক করে সরকারি খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে তাদেরকে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া চলছে। পর্যায়ক্রমে বাকি পরিবার গুলোকেও পুনর্বাসিত করা হবে।
তিনি বলেন, এখানে ভাঙ্গন রোধে ও স্রোত ঠেকাতে বিকল্প প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে অত্র উপজেলার কৃতি সন্তান বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার মহোদয় ও স্থানীয় সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন মহোদয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পরে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান জানান, ধনু নদের ভাঙ্গনের ফলে চরপাড়া গ্রামে ইতোমধ্যে অর্ধশত বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। তাদেরকে চাল ডাল না দিয়ে বাড়ীঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে এবং ঘর- দরজা মেরামত করতে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। এভাবে নদী ভাঙ্গন চলতে থাকলে একদিন পুরো পাঁচহাট গ্রামেরই অস্তিত্ব থাকবে না।